অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি বিষয়ক সাংবাদিক কর্মশালা


আঙ্গুর নাহার মন্টি
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায়
- ইউএসএআইডি ভয়েস অফ আমেরিকা

সংক্রামক রোগ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে আজ সোমবার ঢাকায় শেষ হলো ‘এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি’ শীর্ষক দুদিনের এক কর্মশালা।

সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল সাংবাদিক গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের অর্থায়নে বিশ্বব্যাপী ধারাবাহিক কর্মশালার অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বক্তারা বলেন, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পাখি বা হাসঁ-মুরগীর মাধ্যমে পোল্ট্রি ফার্মে সংক্রমিত হয়। এই রোগ শুধু অর্থনীতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না; বরং তা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীকেও সংক্রমিত করে। বার্ড ফ্লু আক্রান্ত পাখি বা হাসঁ-মুরগীর লালা, রক্ত ও বিষ্ঠার মাধ্যমে ভাইরাসটি নির্গত হয়। আর এগুলোর সংস্পর্শে আসা মানুষ ও প্রাণীও দ্রুত আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রতিরোধ না করা হলে তা মহামারীর আকারও নিতে পারে।

ভয়েস অফ আমেরিকার উন্নয়ন বিভাগের প্রধান জোন মাওয়ার বার্ড ফ্লু’কে ক্রস বাউন্ডারি ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করে তা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা কি, কিভাবে এটি ছড়ায়, প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা কি হবে এবং প্রতিকারের উপায় কি, সে সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য বিশ্বব্যাপি মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারে সাংবাদিকরাই। এজন্য দরকার ভাল মানের সাংবাদিকতা। আর সেটিই এই কর্মশালার লক্ষ্য। খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস করা এবং পশুপাখি নিয়ে একই ঘরে না থাকার মতো খুব সহজ ও সাধারণ কিছু তথ্যের মাধ্যমে, বাংলাদেশে সাংবাদিকরা বার্ড ফ্লু মহামারী আকারে রূপ নেয়ার আগেই সহজেই তা প্রতিরোধ করতে পারে বলেও মনে করেন জোন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে হাসঁ-মুরগী বা অন্যান্য পাখিতে বার্ড ফ্লু ব্যাপক আকারে দেখা গেলেও মানুষের বেলায় এখনও অনেক কম দেখা গেছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৭ জন এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জায় সংক্রমিত হয়েছেন বলে কেইস ফাইল হয়েছে। এর মধ্যে একজন মারাও গেছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষক ড. এ এস এম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জার সিজন এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত, অর্থাত বর্ষাকাল। এসময় অসুস্থ হাসঁ-মুরগী এড়িয়ে চলা এবং অসুস্থ হলে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দ্রুত যোগাযোগ করে সেবা নিতে হবে। বার্ড ফ্লু নিয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সহযোগী সংস্থাগুলো বেশ ভালমানের নজরদারি প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এমন কোন তথ্য খবরে প্রকাশ করা ঠিক নয় যা সমাজে আতংক তৈরি করবে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মেরীল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন হায়দারও মনে করেন এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে সাংবাদিকদের বিজ্ঞানসম্মত তথ্য জনগণের কাছে ছড়িয়ে দিতে হবে ।

ইউএসএআইডি বাংলাদেশের অফিস অফ পপুলেশন, হেলথ, নিউট্রিশন এন্ড এডুকেশন-এর অ্যাক্টিং ডিরেক্টর গ্রেগ জে এডামস এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সেমিনারে গণমাধ্যমের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা অনেক তথ্যবহুল ও একটি জটিল ইস্যু।এ ব্যাপারে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। তবে কোন রকম আতংক তৈরি ছাড়া সঠিক তথ্যগুলো কার্যকর উপায়ে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়াটা গণমাধ্যমের জন্য চ্যালেঞ্জ বলেও মনে করেন তিনি।


সরাসরি লিংক
XS
SM
MD
LG