অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আন্তর্জাতিক রেডক্রসের সতর্কতা, করোনায় দক্ষিণ এশিয়া মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি


দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা ভাইরাস্ নিয়ে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নতুন করে সতর্কতা দিয়েছে। বলেছে, নতুন হটস্পট হতে চলেছে এই এলাকা। বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে যেভাবে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে তাতে উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি একবাক্যে বলেছে, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে এই অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে। সংস্থা দুটি বলেছে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ মানুষের বাস এই অঞ্চলে। ঘনবসতি হওয়ার কারণে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে দ্রুত। রেড ক্রসের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান জন ফ্লেমিং দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, বিশ্বের দৃষ্টি যখন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ আমেরিকার দিকে ঠিক তখনই এই ভাইরাস বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এই অঞ্চলে। এরমধ্যে কেবলমাত্র ভারতেই দশ লাখ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। জন ফ্লেমিং মনে করেন এই অবস্থায় বিশ্বকে দক্ষিণ এশিয়ার দিকে নজর দিতে হবে। তা নাহলে মানবিক বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠবে। তার মতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ পরিস্থিতি মোটেই ভাল নয়। বিশ্বে করোনা আক্রান্ত রোগীর মধ্যে দশ ভাগই হচ্ছে এই দুটো দেশে। জন ফ্লেমিং ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান পরিস্থিতির নানা দিক তুলে ধরে বলেন অনেক পদক্ষেপ নেয়া হলেও সংক্রমণের গতি থামানো যাচ্ছেনা। রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক জনগণের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। যদিও এগুলো যথেষ্ট নয়। ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে রেডক্রস সহ বিশ্বকে আরও কিছু করতে হবে। যা এই মুহূর্তে জরুরী।

ওদিকে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের সতর্কতার মধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। শনাক্তের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। নতুন করে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে মারা গেছেন দুই হাজার ৭০৯ জন। আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ দুই হাজার ৬৬ জন। একদিকে কিট সংকট অন্যদিকে ফি নির্ধারণ এবং সরকারি কৌশলের কারণে টেস্ট অনেক কমে গেছে। এখন ১১ হাজারের মধ্যেই আটকে আছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা মত দিচ্ছেন টেস্ট না বাড়ালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টেস্টের উপর আগেই তাগিদ দিয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এখানে প্রতি দশলাখে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ছয় হাজার জনের। যেখানে ভারতে ১০ হাজার এবং পাকিস্তানে সাড়ে সাত হাজার। আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দশলাখ মানুষের মধ্যে দেড় লাখকে পরীক্ষায় আওতায় নেয়া হয়েছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সপ্তদশ। রোগীর সংখ্যার দিকে জার্মানি ও ফ্রান্সের পরেই রয়েছে বাংলাদেশ।

সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG