শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী দেখানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমরা অনেকটাই করোনামুক্ত। এখানে সংক্রমণ কম। মৃত্যুও কম। কিন্তু সরকারি সংস্থার একটি রিপোর্ট সব ওলট-পালট করে দিয়েছে। নতুন করে আতঙ্কও ছড়িয়েছে। তথ্যের গড়মিল প্রকট হয়েছে এই রিপোর্টে। সোমবার প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। ওয়ার্ল্ডোমিটারেও এটাই লিপিবদ্ধ রয়েছে। রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং আইসিডিডিআর,বির সম্মিলিত এই জরিপ রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, মার্চ নয় ফেব্রুয়ারি মাসেই বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ ঘটেছিল। ইউএসএআইডি, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত এই জরিপে আক্রান্তের চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে। বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাতে কমপক্ষে ৪৫ ভাগ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এই তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় প্রায় এক কোটি মানুষের শরীরে করোনা প্রবেশ করেছে। অথচ সরকারি হিসেবে এখনও সংক্রমণের সংখ্যা চার লাখের ঘরে রয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে আগাগোড়াই বিতর্ক ছিল। এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজারের অল্প বেশি। উপসর্গবিহীন রোগীকে কখনও করোনা বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। সমীক্ষায় উপসর্গ ছাড়া রোগীকে করোনা হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজধানীতে করোনা আক্রান্তের মধ্যে লক্ষণ বা উপসর্গ ছিল না। মধ্য এপ্রিল থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়। ঢাকার ৮টি বস্তির ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, ৭৪ ভাগ বস্তিবাসী আক্রান্ত হয়েছেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সংক্রমণের সংখ্যা নিয়ে মার্চ থেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলেছেন, টেস্টের সংখ্যা কম হওয়ায় কত রোগী আক্রান্ত জানা যাচ্ছে না। টেস্টের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থা একদম নিচে। ৩১ জেলার ১২ হাজার ৬৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ মানুষের এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। যদিও গবেষকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দ্বিতীয় ঢেউ দোরগোড়ায়। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে বিপদ হতে পারে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৫৩৭ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম ও আরও ১০ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।