কথা ছিল করোনার জন্য ভারতে অর্থনীতির যে দুরাবস্থা শুরু হয়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন এবং সেই অবস্থা আরো খারাপের দিকে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যৎবাণী করছেন, এর মধ্যে জীবন ও জীবিকার একটা ব্যবস্থা করা এবং দুইয়ের মধ্যে একটা ভারসাম্য আনা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই চিন্তা ভাবনা ও আলোচনা চলছিল। সেই অনুযায়ী দেশে আজ থেকে ট্রেন চালুর ব্যবস্থা করা হলো। এই মুহূর্তে সবকটি ট্রেন চলবে না ঠিকই, কিন্তু আজ বিকেল থেকেই টিকিট বুকিং করা শুরু হয়েছে এবং কাল থেকে ১৫ জোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন রাজধানী দিল্লি থেকে দেশের বিভিন্ন অংশে যাতায়াত শুরু করবে। তার মধ্যে হাওড়াও রয়েছে, অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গেও ট্রেন আসবে ও এখান থেকে যাবে।
তবে এখন পর্যন্ত ঠিক হয়েছে যে শুধুমাত্র এসি কামরাসহ রাজধানী ট্রেন, যা প্রথম শ্রেণীর ট্রেন হিসেবে বিবেচিত, সেগুলোই চলবে এবং এতে কোন কনসেশন থাকবে না। ট্রেনে সবাইকে মাস্ক পরে উঠতে হবে, ওঠার আগে শরীরে জ্বর বা অন্য কোন উপসর্গ আছে কিনা পরীক্ষা করা হবে। টিকিট কাটতে হবে একমাত্র অনলাইনে, আর ট্রেনে কোন রান্না করা খাবার দেওয়া হবে না, সংক্রমণ এড়ানোর জন্য বিছানা-কম্বলও দেওয়া হবে না। এই ট্রেনগুলো চলা শুরু করার পর বাকি ট্রেন ধীরে ধীরে কী ভাবে চালানো যায় তার চিন্তা-ভাবনা শুরু হবে।
তবে এই মুহূর্তে শ্রমিকদের নানা জায়গা থেকে নিজের নিজের ঘরে ফিরিয়ে আনার জন্য তিনশো ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেগুলোকে বলা হচ্ছে শ্রমিক ট্রেন। এছাড়াও বহু ট্রেনের কামরা রোগীদের জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছে, সেও প্রায় কুড়ি হাজার কামরা। সুতরাং এখনই ট্রেন কতগুলো চালানো যাবে সেই বিষয়ে একটা সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
তবে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে দেশে অর্থনীতির চাকা চালু রাখতে হলে অবশ্যই গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। কারণ ভারতে এমন আর্থিক অবস্থা খুব কম জনেরই আছে, যাঁরা নিজস্ব গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেন ও তাতে যাতায়াত করতে পারেন। তাছাড়া সেই গাড়ি দীর্ঘ পথে চলার জন্য উপযুক্ত নয়। সুতরাং বাস, ট্রেন, ট্যাক্সি এবং যেসব শহরে মেট্রো আছে সেগুলিও কবে থেকে এবং কী ভাবে চালানো শুরু করা যাবে সেই নিয়ে এখন জোরকদমে ভাবনা চিন্তা চলছে।