প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান বুধবার সন্ধ্যার পর বাংলাদেশের উপকূল এবং পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে পূর্ণ গতিতে আঘাত হানার পর বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ তা দুর্বল হয়ে যায়।
ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত দেশের ১৩ টি জেলা থেকে পাওয়া সর্বশেষ খবরে জানা গেছে ঘরবাড়ী, গাছ ও দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে, পানিতে ডুবে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অন্তত ১২ জন নিহত এবং বহু লোক আহত হয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের ফলে উপকূলের সকল জেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চল সমুদ্রের লোনা পানিতে ডুবে গেছে, হাজার হাজার ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি, রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে, ক্ষতি হয়েছে ফসলের এবং ডুবে গেছে শত শত চিংড়ি ও মাছের ঘের।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, সেখানে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন ৫০ লাখের বেশি মানুষ এবং অনেক জায়গায় টেলিফোন এবং মোবাইল সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা উপড়ে পড়া গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে সড়ক-মহাসড়ক গুলো পরিষ্কার করছেন।
দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের রেখে যাওয়া ক্ষয়-ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নির্ধারণ করতে সময় লাগবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের বৃহস্পতিবার থেকেই ঘর নির্মাণ, অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব ও পরিচালকরা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য জেলা প্রশাসকদের সাথে সমন্বয় করে কাজ শুরু করেছেন বলে তিনি জানান।
এদিকে, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় ঝড়ের মধ্যে মালবাহী একটি ট্রাক উল্টে গেলে অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যারা ঢাকা থেকে ঐ বাহনে করে বাড়ী ফিরছিলেন বলে পুলিশের ধারণা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের নাম পরিচয় তাৎক্ষনিক ভাবে জানা যায়নি।