বিশিষ্ট নাট্য পরিচালক, অভিনেত্রী ও নাট্যকর্মী ঊষা গাঙ্গুলি আজ বৃহস্পতিবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মারা গিয়েছেন। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। আদতে উত্তরপ্রদেশের মেয়ে হয়েও তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজস্থানে, তারপর কলকাতায় চলে আসেন কলেজে পড়ানোর জন্য এবং এখানেই একজন বাঙালিকে বিয়ে করে কলকাতার বাসিন্দা হয়ে যান। তাঁর আসল পরিচয় কিন্তু নাট্যকর্মী হিসেবে।
পশ্চিমবঙ্গে হিন্দি নাটক করে যাঁরা সাফল্যের শিখরে উঠেছেন তেমন দু'জনের মধ্যে একজন হলেন ঊষা গাঙ্গুলি। নাট্যগোষ্ঠী রঙ্গকর্মীর প্রতিষ্ঠাতা ঊষা গাঙ্গুলী বহু নাটক করেছেন, তার মধ্যে একটি মাত্র বাংলায়, বাকি সব ক'টি হিন্দিতে। পশ্চিমবঙ্গে আর একজন যিনি হিন্দি নাটক করে সাফল্য পেয়েছেন তিনি হলেন পদাতিকের শ্যামানন্দ জালান। ঊষা নাট্যজীবনের শুরুতে বিখ্যাত সংস্কৃত নাটক মৃচ্ছকটিকের হিন্দি রূপ দিয়েছিলেন, "মিট্টি কি গাড়ি"। সেটি তাঁর প্রথম প্রযোজনা। বসন্তসেনার চরিত্রে তাঁর অভিনয় রীতিমতো সাড়া ফেলেছিল। তারপর একে একে "মহাভোজ", "রুদালি", "হোলি", "সারহাদ পার মান্টো", "চন্ডালিকা" নাটক করে গিয়েছেন। তাঁর একমাত্র বাংলা নাটক মানসী। তবে কাশীনাথ সিং-এর গল্প "কানে কৌন কুমতি লাগে" অবলম্বনে ঊষা বাংলায় আরো একটি নাটক লিখেছিলেন "কাশিনমামা"। এছাড়া চলচ্চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের ফিল্ম "ওভারকোট"-এর চিত্রনাট্য লিখতেও সহায়তা করেছিলেন তিনি।
তাঁর মৃত্যুতে এই রাজ্যের নাট্যকর্মী এবং চলচ্চিত্র অভিনেতারা অত্যন্ত শোকাহত হয়েছেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে তাঁরা কেউ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হতে পারেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর শোক বার্তায় লিখেছেন, ঊষা গাঙ্গুলিকে হারানো কলকাতার এবং এই রাজ্যের পক্ষে একটা বিরাট ক্ষতি।