বাংলাদেশে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলায় ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামীকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আলিম পরীক্ষা দিতে আসা নুসরাত জাহান রাফিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে এই হত্যাকান্ডে নুসরাতের সহপাঠী ও বহিরাগতরা অংশ নেয়। তদন্ত প্রক্রিয়ায় আলোচিত এ হত্যাকান্ডে ১৬ জনের জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে। রায়ে এদের সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়েছে।
মাত্র ৬২ কার্য দিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ করে দেয়া এই রায় বিচার বিভাগের জন্য একটি মাইলক ফলক বলে মনে করছেন এর্টনী জেনারেল মাহবুবে আলম।
নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুকে নারীত্বের মর্যাদা রক্ষায় তেজদীপ্ত আত্মত্যাগ উল্লেখ করে বিচারক বলেন, এ ঘটনা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। নারীত্বের মর্যাদা রক্ষায় ভিকটিম নুসরাত জাহান রাফির তেজদীপ্ত আত্মত্যাগ তাকে ইতোমধ্যে অমরত্ব দিয়েছে। তার এ অমরত্ব চিরকালের অনুপ্রেরণা। হত্যাকান্ডের পর আসামিদের শাস্তির আওতায় আনার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকারও প্রশংসা করেন বিচারক।
আলোচিত এ মামলার ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
নুসরাত জাহান হত্যা মামলায় সব আসামির ফাঁসি আদেশ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে তার পরিবার। রায় দ্রুত কার্যকরের পাশাপাশি নিজেদের নিরাপত্তা দাবি করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা সন্তুষ্ট নন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। নিয়ম অনুযায়ী সাত কার্য দিবসের মধ্যে তারা আপিল করতে পারবেন।