অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে বিনিয়োগে শীর্ষে চীন


বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের দাপট এখন সবচেয়ে বেশি। ২০১৬ সনের পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে দেশটি। ফলে এই মুহূর্তে চীনই বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিনিয়োগকারী রাষ্ট্র।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের স্থান চতুর্থ। এক সময় যুক্তরাষ্ট্র ছিল শীর্ষে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ খাতেই চীনের বিনিযোগ বেশি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে বৈদেশিক সরাসরি বিনিয়োগ ৩৬০ কোটি ডলার। এর মধ্যে চীনই করেছে বেশি। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক শামস আল মুজাহিদ বলেছেন, বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই এখন চীন বৃহৎ বিনিয়োগকারী। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। গত বছর চীনের পর নেদারল্যান্ড ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী রাষ্ট্র। দেশটি বিনিয়োগ করে ৬৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। ৩৭ কোটি ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করে তৃতীয় স্থানে বৃটেন।

স্মরণ করা যায় যে, বাংলাদেশের ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই ছিল সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী। গতবছর ১৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করে চতুর্থ স্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৮০ সনের পর থেকে বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ১৯৯৫ সালে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ। এরপরই নরওয়ের টেলিনর ও মিশরের ওরাশকমের মতো টেলিকম জায়ান্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে লড়াই করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে জ্বালানি সংকট ছিল তীব্র। এর মধ্যে ২০১৩ সনে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড অবকাঠামো উদ্যোগের ঘোষণা দেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে চায়। এরই অংশ হিসেবে ২৩টি দেশে কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ২৩শো কোটি ডলার ঋণ দেয় চীনা ব্যাংকগুলো। যুক্তরাষ্ট্র থিংক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস এ্যান্ড ফিনান্সিয়াল অ্যানালাইসিস এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ৱজ্বালানি খাতে চীনের ঋণের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অর্থ অর্থাৎ ৭০০ কোটি ডলার পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জ্বালানি খাতে চীনের এমন প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তার মতে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। এখানে দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক ও আইনি হয়রানি আছে। কিন্তু চীনা বিনিয়োগকারীরা জ্বালানি খাতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করছেন। তারা চায় বিদ্যুৎ খাত থেকে সর্বোচ্চ মুনাফা ঘরে তুলতে। যেই খাতে কিনা কোন সুশাসন বা জবাবদিহিতা নেই।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্মকর্তারা মনে করেন অযথাই সমালোচনা করা হচ্ছে। কারণ এখানে সুশাসন রয়েছে। যদিও কয়েক বছর ধরে জ্বালানি খাতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে জোরেসোরে। বিশেষ করে বাংলাদেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে চীনের দৌড়ঝাপের পর সমালোচনা প্রবল হয়েছে। এই প্রকল্পে ১৮০০ কোটি ডলার ব্যয় হবে বলে আণবিক জ্বালানি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন।

please wait

No media source currently available

0:00 0:04:17 0:00


XS
SM
MD
LG