করোনা ভাইরাসে বাংলাদেশের অর্থনীতি কাবু হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ১৪টি সেক্টরে এক ধরনের নেতিবাচক সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ায় প্রাথমিক হিসেবে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কাঁচামালের অভাবে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বিঘিœত হচ্ছে। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠান মূলতঃ চীনা কাঁচামাল নির্ভর।
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন এক প্রতিবেদনে বলেছে, তৈরি পোশাক, চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, প্রসাধন, বৈদ্যুতিক পণ্য, কম্পিউটার, পাট সূতা, মুদ্রণ শিল্প, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ইলেকট্রনিকস পণ্য, কাকড়া, কুঁচে, চশমাসহ বিভিন্ন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে নানাবিধ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু সংযোগ, পায়রা বিদ্যুত প্রকল্প, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল সংযোগ, ঢাকা-বাইপাস সড়কসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম ব্যহত হতে পারে। ঔষধ শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে এই সমিতির নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তারা বলছেন, এই সংকট যদি আরো দু’মাস চলতে থাকে তাহলে এক অনিশ্চিত অবস্থার মুখোমুখি হবে এই শিল্প। ট্যারিফ কমিশন বলছে, ওভেন পোশাকের ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে। আর নিট পোশাকের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাঁচামাল চীন থেকেই আমদানি করা হয়। তৈরি পোশাক খাতের ৫০ ভাগই চীন নির্ভর। বিজিএমইএ’র সভাপতি রুবানা হক মনে করেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতের জন্য আগামী ৩ থেকে ৪ মাস খুবই সংকটজনক।
ব্যাংকগুলো বেশি দুশ্চিন্তায়। কারণ স্বাভাবিক আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ঋণের কিস্তির টাকা দিতে পারবেন কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। বাংলাদেশ-চীন বিজনেস ক্লাবের সভাপতি আবদুল মোমেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, চলমান পরিস্থিতি ভয়াবহ। চীনের বিকল্প খোঁজারও সুযোগ নেই।
এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের মোট আমদানির ২৫ শতাংশেরও বেশি চীন থেকে আসে। গত অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ছিল প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময় আমদানি ছিল ৮৩ কোটি ডলার।