অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে চলমান পরিবহন ধর্মঘটে অচল উত্তরজনপদ


বাংলাদেশে আইন সংশোধনের দাবীতে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে। আটচল্লিশ ঘন্টার ধর্মঘটে গোটা উত্তরজনপদের লাখ লাখ যাত্রী বাসস্ট্যান্ডগুলোতে আটকা পড়ে আছে। অটোরিক্সা, ভ্যান ছাড়া রাস্তায় আর কোন যানবাহন চলছে না। সকালে আন্ত:জেলা বাস সার্ভিসগুলোর কিছু বাস রাস্তায় বের হলে পরিবহন শ্রমিকরা সেগুলো আটকে দিয়েছে। সকাল আটটার দিকে বগুড়ার রংপুর মহাসড়কের বেশ কিছু জায়গায় গাড়ী ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে। তারপর থেকে আর কোন পরিবহন রাস্তায় নামেনি।

এদিকে, উত্তরাঞ্চলের সাথে দেশের সব প্রান্তের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। এর মধ্যে চাকরিজীবীদের সংখ্যা উল্লেখ করার মত। কথা হয় বগুড়ার ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ডে আব্দুল মোমিনের সাথে। তিনি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে সিএনজি'তে বগুড়া পর্যন্ত এসেছেন। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। শনিবার তার ছুটি শেষ হওয়ায় রাতেই তাকে ঢাকায় পৌঁছতে হবে। তিনি সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডে বসে আছেন। কোন বাস ঢাকার দিকে না যাওয়ায় তিনি সেখানেই আটকে আছেন।

দূরপাল্লার পাশাপাশি আন্তঃজেলা বাস সার্ভিসগুলোও বন্ধ থাকায় চাপ পড়েছে ট্রেনের ওপর। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর বগুড়ায় উত্তরের প্রায় ১৬ জেলার ব্যবসায়ী এবং সাধারণ ক্রেতারা প্রতিনিয়তই আসেন। পরিবহন ধর্মঘট চলায় এসব ব্যবসায়ীরাও শহরে পৌঁছতে পারেননি। এর প্রভাব পড়েছে বগুড়ার মার্কেটগুলোতেও।

অন্যদিকে, পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বড় শহরগুলোতে ধর্মঘটের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। রোববার সকাল থেকে পরিবহন না পেয়ে দিশেহারা শহরবাসী হেঁটেই গন্তব্যে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বগুড়াসহ গোটা দেশ।

‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ সংসদে সদ্য পাস হওয়ার পর থেকেই শ্রমিকরা এর বিরোধিতা করে আসছে। তারা এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবি আদায়ে সারাদেশে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়। ধর্মঘট রোববার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়। এ সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে লাগাতার ধর্মঘটের ঘোষণাও দিয়ে রাখেন সংগঠনটির নেতারা।

বগুড়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডল সরকারের সদ্যপাস করা পরিবহন আইনের বিরোধীতা করে বলেন, 'একজন ড্রাইভারের যদি ৫লাখ টাকা জরিমানা দেয়ার ক্ষমতা থাকতো তাহলে ড্রাইভার হতে কেউ আসতো না। অন্য কিছু করতো'। তিনি আরো বলেন, 'হত্যা মামলায় জামিন হয় আর রোড এক্সিডেন্ট মামলায় জামিন হবে না এটা আমরা মানতে পারি না। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে দ্রুত এই আইন সংশোধ করে তাদের আটদফা মেনে নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।

(প্রতীক ওমর, বগুড়া, ভয়েস অফ আমেরিকা।)

XS
SM
MD
LG