অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা কমছেঃ আইএসসিজি


ছবিতে বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের একটি ক্যাম্প দেখা যাচ্ছে। ছবি সৌজন্য: রহমান মাসুদ/ নিউজবাংলা২৪ ডট কম
ছবিতে বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের একটি ক্যাম্প দেখা যাচ্ছে। ছবি সৌজন্য: রহমান মাসুদ/ নিউজবাংলা২৪ ডট কম

বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য দাতাদের সহায়তার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমছে।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ বা আইএসসিজি-র দেয়া সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে । বলা হয়েছে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০২১ সালের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে যে অর্থ চাওয়া হয়েছিল নভেম্বরের ৯ তারিখ পর্যন্ত তার মাত্র ৫৭ শতাংশ পাওয়া গেছে। আইএসসিজি রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ২০২১ সালের ব্যয় নির্বাহের জন্য দাতাদের কাছে ৯৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার অনুদানের আবেদন জানিয়েছিল।

সংস্থাটির দেয়া তথ্য মোতাবেক গত ১০ মাস ৯ দিনে আইএসসিজি-র জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে চাওয়া অর্থের মধ্যে পাওয়া গেছে ৫৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আইএসসিজি অবশ্য চলতি বছরের বাকি যে সময় রয়েছে সে সময়ের মধ্যে আরও কি পরিমান অর্থ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার উল্লেখ করে নাই।

সংস্থাটির পরিসংখ্যান অনুযায়ি ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর চলতি বছরের ৯ই নভেম্বর পর্যন্ত দাতারা এ সকল শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ২৮৩ কোটি ডলার সহায়তা প্রদান করেছে যা মোট সহায়তার আবেদনের ৬৬ শতাংশ। জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট সহায়তা চাওয়া হয়েছে ৪৩০কোটি ৬০ লাখ ডলার।

রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য দাতাদের কাছে চাওয়া অর্থের পরিমাণ কমতে থাকার বিষয়ে ভয়েস অফ অ্যামেরিকার পক্ষে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন দাতা দেশ গুলোর নিজস্ব অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে শুধু রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নয় বরং বিশ্বের অন্যান্য স্থানে যে সকল শরণার্থীরা বা বাস্তুচ্যুতরা রয়েছেন তাঁদের সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রেও পর্যাপ্ত সাড়ার অভাব বিগত কয়েক বছর ধরেই পরিলক্ষিত হচ্ছে।

করোনা মহামারির কারণে এ অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলছেন দাতাদের আর্থিক সহায়তা কমার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরও চাপ পড়ছে। তিনি বলেন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি ঝুলে থাকাটা শুধু আর্থিক নয়, নিরাপত্তাসহ অন্যান্য সমস্যারও সৃষ্টি করছে। আশার কথা হচ্ছে সম্প্রতি জাতিসংঘে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে তাতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বলেন রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র সমাধান এবং এ জন্য বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও বেশী সক্রিয় হতে হবে।

XS
SM
MD
LG