রাজশাহীর তরুণ তফিকুল ইসলাম। চিনিকলের গাদ থেকে সিএনজি (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) উৎপাদন করছেন তিনি। এই প্রথম চিনিকলের প্রেসমাড থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন করা হচ্ছে। আগে প্রেসমাড থেকে শুধু সার তৈরি হত। এখন তা থেকে গ্যাস ও সার দু’টোই হচ্ছে। প্রাকৃতিক উপাদানে প্রস্তুত এই গ্যাস ও সার গোবর থেকে উৎপাদিত গ্যাস ও সারের চেয়ে পরিমাণে ও গুণে অনেক এগিয়ে।
গল্পটা একটু বিস্তারিত বলি, তফিকুল ইসলাম সুশিক্ষিত যুবক। পড়াশোনা করেন যুক্তরাজ্যের লিভারপুল জন মরেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভারসিটি অফ ওয়েলস এ । সেখানে পড়াশোনা পাশাপশি একটি বায়ো গ্যাস কোম্পানিতে চাকুরি সুযোগ পান তিনি। দুই বছর কাজ করে মুঠো ভরা স্বপ্ন নিয়ে ফিরে আসেন প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ এ।
বাংলাদেশ এ এসেই তিনি স্বপ্ন বাস্তবায়নে নেমে পড়েন। ইতিমধ্যে তিনি “ইফাত ব্যায়ো সিএনজি প্লান্ট” নামে একটি প্লান্ট গড়ে তুলেছেন। এখানে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় রাজশাহী সুগার মিল থেকে আনা প্রেসমাড। প্রতি টনের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা। তফিকুল ইসলাম জানান, “আমার প্ল্যান্ট সম্পূর্ণ মাটির ওপর তৈরি। কাঁচামাল ও পানি মিশ্রণের জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করার জন্য হিটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। ডাইজেস্টার মিক্সিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয় সর্বোচ্চ পরিমাণ গ্যাস উৎপাদনের জন্য। আর গ্যাস পরিশোধনের জন্য আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে কমপ্রেশনের মাধ্যমে বোতলজাত করা হয়। তার এ প্লান্টে প্রতিদিন দুই টন গাদ থেকে ৩০০ কিউবিক মিটার সিএনজি উৎপাদন করা যায়।” তিনি বলেন, “প্রতিদিন জৈব সার উৎপাদন করা যায় দেড় টন। তবে অনুমতি না থাকায় এ কার্যক্রম নিয়মিত চালানো হয় না।”
তবে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দাপ্তরিক জটিলতার কারনে থমকে আছে তার এই গ্যাস ও সারের বাজারজাতকরন পক্রিয়া। সরকারি সহযোগীতা পেলে এই বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরী করে দেশের অনেক তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হবেন এই তরুন, এমনটাই প্রত্যাশা তার।