অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা, গুলিতে ২ জনের মৃত্যু


বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন লোগো
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন লোগো

বাংলাদেশে ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ৯টি পৌরসভায় সোমবার ভোট গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় বারের মতো দলীয় প্রতীকে হওয়া এই নির্বাচনেপ্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না।

সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে সংঘাত-সহিংসতার তথ্য পাওয়া গেছে। কক্সবাজারের মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরসমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন।

নোয়াখালীর হাতিয়া ও সুবর্ণচর উপজেলায় ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী।

তাদের মধ্যে দুইজন প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত। মংলায় নির্বাচন চলাকালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৫জন আহত হওয়ার খবরপাওয়া গেছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপাড়ায় একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীশেখ কামাল এবং বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারফ হোসেন খোকনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মহেশখালী উপজেলাস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গোলাগুলিতে দুই পক্ষের অন্তত ৩৫জন আহত হয়েছেন। সংঘাতের কারণে কুতুবজোমসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামিয়া সুন্নাহ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়।

ওদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় আরও একজনের মৃত্যু হয়। কুতুবদিয়া থানারওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদেরমধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় গুলিতে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। নিহত ব্যক্তি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন।

সাতক্ষীরার কেঁড়গাছি ইউনিয়নেও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। অভিযোগ আসার পর ওই কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে দেয় নির্বাচন কমিশন।

ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকা এবং অস্ত্রধারীর অবাধ বিচরণ ও হুমকির অভিযোগ এনে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নৌকা প্রতীকের দুই চেয়ারম্যানপ্রার্থীসহ পাঁচজন প্রার্থী ভোটবর্জনের ঘোষণা দেন। ভোট শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

দশম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ৩৭১টি পরিষদে ভোট গ্রহণ করতে গত ৩ মার্চ নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে। গত ২১ জুন ২০৪টিইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ার পর করোনা পরিস্থিতির কারণে বাকি নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। ​স্থগিত থাকা ১৬০টি ইউনিয়ন ও ৯টি পৌরসভায় সোমবারভোট গ্রহণ হলেও ৪৫টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের আগেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ইউনিয়নপরিষদ নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ী হওয়ার এটি একটি নতুন রেকর্ড।

বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত নবম ইউপি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা দলীয় প্রতীকে অংশ নিয়েছিলেন। ওইনির্বাচনে সব মিলিয়ে ২১২জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন। এর আগে ১৯৮৮ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়ে সারা দেশে ১০০টি ইউনিয়নেপ্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিলেন।

XS
SM
MD
LG