অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ জাতির জোট আসিয়ান সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু প্রাধান্য পেয়েছে


দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ জাতির জোট আসিয়ান সম্মেলন ঘিরে রোহিঙ্গা ইস্যু। জাতিসংঘ মহাসচিব নিজেই এই ইস্যুটি সামনে এনেছেন। আসিয়ান নেতারাও একমত অনেকটা। অং সান সুচি ৩৫তম এই সম্মেলনে হাজির থাকলেও কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন শনিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে শুরু হয়েছে। থাই প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে আসিয়ানের চেয়ারম্যান। এই সম্মেলনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা ইস্যুর পাশাপাশি গুরুত্ব পেয়েছে রোহিঙ্গা সংকট। মিয়ানমারের রাখাইন অঙ্গরাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্মম অভিযানে বাস্তুচ্যুত ও বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ভাগ্য নির্ধারণে সম্মেলনে আলোচনা করেছেন নেতারা। রোহিঙ্গা এসোসিয়েশন থাইল্যান্ড এক বিবৃতিতে নেতাদেরকে ধারাবাহিক এই সংকটের নানাদিক তুলে ধরেছে। এই মানবিক সংকট সমাধানে তারা মিয়ানমার সরকার ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর প্রতি পাঁচটি সুপারিশ করেছে। তারা বলেছে, রাখাইন অঙ্গ রাজ্য থেকে পালাতে বাধ্য হওয়া, স্থানান্তরিত হওয়া ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রোহিঙ্গাদের আমরা প্রতিনিধিত্ব করছি। আমরা এখানে এসেছি উদ্বেগ জানাতে। নেতাদের সহযোগিতা চাইতে। সংগঠনটি মিয়ানমার সরকারের প্রতি তিনটি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে যাওয়া ও সেখানে থেকে যাওয়া সকল বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করে নাগরিকত্ব দেয়া। নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে স্বেচ্ছায় ফিরতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা। কোন শরণার্থীকেই যেন প্রত্যাবাসনে জোর করা না হয়। তৃতীয় সুপারিশ হচ্ছেÑ মিয়ানমার সরকারের বেসামরিক পুলিশ ও প্রতিরক্ষা খাতে কাজ করার সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।

থাই রোহিঙ্গা কাউন্সিল আসিয়ান নেতাদের কাছে দুটি সুপারিশ করেছে। প্রথমত: রোহিঙ্গা অভিবাসীরা যে দেশে অবস্থান করছে সেখানে বৈধভাবে বাস ও কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেয়া। দ্বিতীয়ত: আসিয়ান সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে দীর্ঘ সময় ধরে যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরতে ইচ্ছুক নয়, তাদের স্থায়ীভাবে থাকার অনুমোদন দেয়া।

ওদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব এ্যান্থনিও গুতেরেস রোববার আসিয়ান সম্মেলনে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ নিশ্চিত করতে দায়বদ্ধ মিয়ানমার। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচির উপস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য নির্ধারিত এলাকায় মানবাধিকার কর্মীদের পূর্ণ ও অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান।

২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস অভিযান শুরু করে। এই নৃশংসতা থেকে বাঁচতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ মিয়ানমারের এই সামরিক অভিযানকে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। গত দুই বছরে প্রত্যাবাসন নিয়ে একাধিক সমঝোতা হলেও প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের সে দেশের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করে না। তারা জানিয়েছে, রোহিঙ্গা একটি স্ট্যাটাস দেবে। যার আওতায় পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকার পাবে না রোহিঙ্গারা। তাছাড়া তাদেরকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে থাকতে হবে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো মিয়ানমারের এই অবস্থানের সঙ্গে আগাগোড়া ভিন্নমত পোষণ করে আসছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হতে আরো দু’বছর লাগতে পারে বলে আসিয়ানের এক গোপন প্রতিবেদন প্রকাশের পর সন্দেহ আরো বাড়তে থাকে।

please wait

No media source currently available

0:00 0:02:54 0:00



XS
SM
MD
LG