অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ব্রিটেনে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের জন্য নতুন আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার ভাবনা চিন্তা চলছে


ব্রিটেনে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের জন্য নতুন আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার ভাবনা চিন্তা চলছে। সে নিয়েই সেখানকার উগ্রবাদ মোকাবিলা বিষয়ক মন্ত্রী এবং লর্ড সভার সদস্য তারিক আহমেদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ভয়েস অফ আমেরিকার ঊর্দু বিভাগের শাহনাজ নাফিস। এই সাক্ষাৎকার ভিত্তিক রিপোর্টটি প্রস্তুত করেছেন, আনিস আহমেদ:

সরাসরি লিংক

আইসিল বা আরবি আদ্যাক্ষরে যাকে দায়িশ বলা হয় তাদের উগ্রবাদ মোকাবিলার জন্য, ব্রিটেন নতুন কৌশল গ্রহণ করবে , নতুন আইন পাশ করবে। ব্রিটেনের উগ্রবাদ মোকাবিলা বিষয়ক মন্ত্রী এবং লর্ড সভার সদস্য তারিক আহমেদ ব্রিটেনসহ বিশ্বব্যাপী আইসিল বা দায়িশের বিরুদ্ধে জনমত সম্পর্কে বলেন যে এর অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত এবং মৌলিক কারণ রয়েছে:

প্রথমত সিরিয়ার জনগণের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে সে তো এই দায়িশই করছে। বলার সময় তো এরা বলে যে আমরা ইসলামের নামে এ সব করছি, ইসলামি খেলাফত কায়েমের জন্যে করছি। কিন্তু এ কোথাকার ইসলাম। লর্ড তারিক আহমেদ বলেন সে জন্যই ব্রিটেনে এই চিন্তা ভাবনা চলছে যে ইরাকে এবং সিরয়ায় যারা মধ্যপন্থি তাদেরকে সামনের দিকে নিয়ে আসা জরুরি। বিশেষত ইরাকে এই আইসিল বা আইসিস মোকাবিলায় ব্রিটেন বিমান অভিযানে অংশ নিচ্ছে এবং সিরিয়ায় ও দায়িশ বিরোধী Logistical Support আমরা দিয়ে চলেছি। দিন কয়েক আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, সন্ত্রাসবাদের উপর যে ভাষণ দিয়েছিলেন সে প্রসঙ্গে লর্ড তারিক বলেন:

সন্ত্রাস দমনের এই বিষয়টি আবার ও সংসদে উত্থাপন করা হবে । ব্রিটেনের সংশ্লিষ্টতার জন্যই সংসদে বিতর্কের এবং ভোটাভুটির মাধ্যমে সামনের দিনগুলোর কার্যক্রম নেওয়া হবে।

এ পর্যন্ত ব্রিটেন ইরাকে দায়িশের বিরুদ্ধে অভিযানে শরিক হয়েছে, কিন্তু ২০১৩ সালে যখন সিরিয়ায় দায়িশের বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করার প্রশ্ন উঠে আসে তখন ব্রিটেনের সংসদে ভোটাভূটিতে তা নাকচ করে দেওয়া হয়। কেনই বা সেটা তখন রদ করা হয়েছিল এবং এবার এ বিষয়ে ব্রিটিশ সংসদ কি ধরণের প্রস্তাব অনুমোদন করতে পারে। সে প্রসঙ্গে লর্ড তারিক আহমেদ বললেন:

২০১৩ সাল এবং এখনকার মধ্যে পার্থক্য অনেক। সে জন্যই আমাদের সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি টা এমন যে বিষয়টি আরও একবার সংসদে উত্থাপন করা হোক এবং সংসদের মাধ্যমে আমাদের যদি আরও তৎপর হতে হয় তা হলে তাই করা হবে। তবে ইরাকে যুদ্ধ যখন হয়েছিল প্রাক্তন লেবার সরকারের আমলে তখন আমাদের এখনকার প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে সংসদের সিদ্ধান্তটই হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং তাতে কোন রকম পরিবর্তন আনতে হলে আমরা আবারও সংসদেরই শরনাপন্ন হবো। কাজেই , তিনি বলছেন যে সিরিয়ায় আমাদের অভিযান যদি শুরু করতে হয়, সেটা সংসদের অনুমোদন নিয়েই আমরা করবো । কিন্তু ব্রিটেনের ভেতরে যে উগ্রবাদী তাকে নিয়ন্ত্রণ করা নিয়েও তো প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরুন ভাবছেন এবং এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে যে

ব্রিটেন এ ব্যাপারে নতুন কৌশল গ্রহণ করতে চলেছে। লর্ড তারিক বলেন তিনি নিজেই তো সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রমের মন্ত্রীত্বের দায়িত্বে রয়েছেন ।

তিনি বলেন যে এখন গোটা বিশ্বে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এখন সেই সময়ে এসে গেছে। ব্রিটেন থেকে প্রায় ৭০০ জনের মতো তরুণ তরুণী, কিশোর কিশোরী চলে গেছে সিরিয়া ইকংবা ইরাকে। এর কারণ ইন্টারনেটে দায়িশের অপপ্রচারে এদের মনের মধ্যে একটা প্রভাব রাখছে। সেই অপপ্রচার কি ভাবে রোধ করা যায় । সেই কৌশলপত্র যা শিগগিরই প্রকাশ পাবে তাতে আমরা বলার চেষ্টা করেছি, এটা কেবলমাত্র সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এতে সম্পৃক্ত হতে হবে গোটা সমাজকে, মুসলিম সমাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও। এতে সম্পৃক্ত হতে হবে মসজিদের ইমাম সাহেবদের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে, বস্তুত আমাদের সকলকে। আমাদের সেই সব লোককে চিহ্নিত করতে হবে যারা নিষ্পাপ মনের উপর প্রভাব ফেলছে দায়িশের। এই বিষয়টি থামানোর উপায় বের করার চেষ্টা করছি আমরা। তা ছাড়া চিন্তার এবং ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা যেটা আমরা ব্রিটেনে কিংবা আমেরিকায় ভোগ করে থাকি, এস রকম কিছু তো ওদের মধ্যে পাওয়া যায় না। এরা তো ইসলামের নামে এমন সব কাজ করছে যা ইসলামতো দূরের কথা কোন ধর্মের সঙ্গেই সম্পর্কিত নয়। তাএদর রুখবার জন্য কি ধরণের আইন দরকার সেটাও আমরা এ বছর হেমন্তকাল নাগাদ কৌশলপত্রে প্রকাশ করবো। আর সেই সঙ্গে এই আইন ও আমরা পাশ করানোর চেষ্টা করবো যাতে যারা সন্ত্রাসবাদের পক্ষে কথা বলছে কিংবা সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সব সংগঠনকে আমরা নিষিদ্ধ করতে পারি। তিনি বলেন এমন লোক ও আছে যারা হয়ত সরাসরি সন্ত্রাস করে না কিন্তু মনের মধ্যে এমন সব কথা বার্তা ঢুকিয়ে দেয় যা প্রকারান্তরে মানুষকে সম্পুর্ণ বিপরীত দিকে নিয়ে যায় । যেমন ধরুন অপপ্রচার হিসেবে বোঝানো হয় পশ্চিমারা ইসলাম বিরোধী আর এটাতো ইসলামে জায়েজ যে আপনি ও সব দেশের বিরুদ্ধে, সে সব দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন।

লর্ড তারিক আহমেদ বলেন এই ধরণের অপপ্রচারের বিরুদ্ধেও ব্রিটেন নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। ব্রিটেন বিশেষ ভাবে উদ্বিগ্ন তার তরুণ সমাজের একাংশকে নিয়ে যাদের বিভ্রান্ত করছে আইসিস বা দায়িশ।

XS
SM
MD
LG