চীন সরকার বেজিং এর তিয়ান আন মেন স্কোয়ারে গনতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীদের ওপর যে নির্মম দমন অভিযান চালায় তার ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে। ছাত্র, শ্রমিক, এবং সরকারী কর্মচারীসহ গনতন্ত্রকামী প্রতিবাদকারীরা রাজনৈতিক পরিবর্তন, দূর্নীতির অবসান, এবং মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শনের দাবী জানাতে রাজধানী শহরে সমবেত হয়েছিলেন।
আমরা জানিনা সেই হিংসাত্মক সংঘর্ষে কতজন নিহত হন, তার পরপরই প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের ধরপাকড় করা হয়। চীনা কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনা সম্পর্কে যে কোন আলোচনার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করে এবং চীনে যাতে ওই ঘটনার কোন বার্ষিকী পালন না করা হয় তা নিশ্চিত করে, চীনের সরকারী ইতিহাস থেকে সেই ঘটনা মুছে ফেলার চেষ্টা করেন।
তবে ১৯৮৯ সালের জুন মাসে সেই হিংসাত্মক দিনগুলিতে কি ঘটেছিল বিশ্ব তা স্মরণ করে । বেজিংএর এক হোটেল থেকে এক তরুনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি যে ভাবে চীনের সশস্ত্র বাহিনীর ট্যাংকের সামনে রুখে দাঁড়ান, তিয়ান আন মেন স্কোয়ারে বীরত্বের এক চিত্র, সেই ঐতিহাসিক ছবিটি বিশ্ববাসী মনে রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের গনতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রম দফতরের উপ-সহকারী মন্ত্রী স্কট বাসবি প্রতিবাদকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন,
‘আমরা চীনের জনগনের মহানায়কদের অভিবাদন জানাই, যারা ৩০ বছর আগে তিয়ান আন মেন স্কোয়ারে তাদের অধিকারের দাবীতে বীরের মত রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের সাহসিকতা ভবিষ্যত প্রজন্ম যারা চীন এবং সারা বিশ্বে, স্বাধীনতা ও গনতন্ত্রের আহ্বান জানায় তাদের জন্য এক অনুপ্রেরনা।’
মিঃ বাসবি বলেন যে, ১৯৮৯ সাল থেকে চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি।
তিনি বলেন, ‘চীনে বাক স্বাধীনতা, মেলামেশা করার স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ অব্যাহত রয়েছে। এবং আমরা মনে করি যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মানবাধিকারের ক্ষেত্রে উন্নতির পরিবর্তে অবনতিই হয়েছে।’
উপসহকারী মন্ত্রী বাসবি চীন সরকারের প্রতি তার কথায় –‘যারা তাদের মানবাধিকার কার্যকর করতে চায় তাদের মুক্তিদান, যথেচ্ছা ধরপাকড় বন্ধ করার এবং যারা ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মতামত পালন করতে চায় তাদেরকে, বিশেষ করে শিনজিয়াং অঞ্চলে তাদের ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ চাপিয়ে দেবার মত নীতিমালা পরিবর্তন করা উচিত যা ফলপ্রসু নয়।
তিনি বলেন, ‘চীনের নিজস্ব সংবিধানে বলা আছে যে, সকল ক্ষমতা জনগনের’। মিঃ বাসবি আরও বলেন, ‘ইতিহাস প্রমান করে যে সরকার যখন তার জনগনের ব্যাপারে সচেতন থাকেন, আইনের শাসনকে মর্যাদা দেন এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখেন তখন সেই জাতি শক্তিশালী হয়।’