দেশের ৪২জন বিশিষ্ট নাগরিক কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ এনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এই নাগরিকগণ গত ১৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নাগরিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০১৭ সনের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিভিন্নভাবে এই নির্বাচন কমিশন গুরুতর অসদাচরণে লিপ্ত রয়েছে। কমিশনের সদস্যরা একদিকে আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন যা কিনা অভিশংসনযোগ্য অপরাধ। প্রেসিডেন্টের কাছে লেখা চিঠিতে তারা এন্তার অভিযোগ করেছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেয়ার নামে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কর্মচারী নিয়োগে চার কোটি ৮০ লাখ টাকার অনিয়ম করেছেন। ইভিএম ক্রয়েও অনিয়ম হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অসদাচরণ, অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সুলাতানা কামাল, এম হাফিজউদ্দিন খান, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. শাহদীন মালিক, ড. আসিফ নজরুল, আলী ইমাম মজুমদার, অধ্যাপক সি.আর আবরার, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদসহ ৪২জন বিশিষ্ট নাগরিক নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ উত্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং নির্বাচন সংক্রান্ত গুরুতর অসদাচরণের কারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্ত হওয়া উচিৎ। এরপর এই তদন্তের প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে অনিয়মের কারণে অপসারণ করবেন তারা আশা করেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে বরাবরই নির্বাচন কমিশন কমবেশি বিতর্কিত ছিল। কিন্তু এভাবে সরাসরি আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিল তা দেখা যায়নি। সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে ও সংবিধান মেনেই তারা এসব অভিযোগ করেছেন। এখন নির্বাচন কমিশনের উচিৎ স্বেচ্ছায় সরে যাওয়া।
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ঘুষ, দুর্নীতি, বিদেশে অর্থপাচারসহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশ আজ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বর্তমানে দেশে অস্বস্তিকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজমান বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খণ্ডন করেছেন। বলেছেন, অসৌজন্যমূলকভাবে একজন যুগ্ম মহাসচিব তাকে চিঠি দিয়ে কৈফিয়ত চেয়েছেন। দলকে অবিহিত না করে অন্য একটি প্ল্যাটফরমে বক্তৃতা দেয়ার কারণে তাকে শোকজ করা হয়েছিল। তবে হাফিজ এই মুহুর্তে দল ত্যাগ করছেন না আভাস, ইঙ্গিতে এটাই বুঝিয়েছেন।
ওদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মারা গেলেন সাত হাজার ২৪২ জন। আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২৬৭ জন।