অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আড়াই বছরের কষ্ট শেষে ভারত থেকে ফিরলো খুলনার সেই দম্পতি   


কাজের সন্ধানে ভারতে যাওয়া খুলনার ডুমুরিয়ার  দম্পতি মোহাম্মদ মন্ডল ও মাজিদা মন্ডল
কাজের সন্ধানে ভারতে যাওয়া খুলনার ডুমুরিয়ার  দম্পতি মোহাম্মদ মন্ডল ও মাজিদা মন্ডল

অবশেষে দেশে ফিরলো কাজের সন্ধানে ভারতে যাওয়া খুলনার ডুমুরিয়ার দম্পতি মোহাম্মদ মন্ডল ও মাজিদা মন্ডল। আজ পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের কাছে হস্তান্তর করে। নিয়ম অনুযায়ী কোয়ারান্টিনে রাখার জন্য তাদেরকে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে হস্তান্তর করা হয়েছে। সংসারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে দুই সন্তানকে দেশে রেখে দালালের পাল্লায় পড়ে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে চরম খারাপ সময় পার করেন তারা। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে প্রথমে তাদের নেওয়া হয় মুম্বাইতে। এরপর মহারাষ্ট্রের পুণে শহরের বুধওয়ার পেথ নিষিদ্ধ পল্লীতে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। দালালরা মাজিদাকে চাপ দিতে থাকে পতিতাবৃত্তিতে জড়ানোর জন্য।কিন্তুু মাজিদা কোনভাবে তাতে রাজি হননি। দালালদের সঙ্গে লড়াই চলতে থাকে মন্ডল দম্পত্তির। সব কিছু জানতে পারে স্থানীয় পুলিশ। দালালরা মোহাম্মদ মন্ডলকে প্রথমে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। পরে মাজিদাও আটক হন। অভিযোগ আনা হয় ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশের।

ভারতীয় আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইন ও অবৈধভাবে প্রবেশের দায়ে মামলা হয়। আদালতের নির্দেশে সাজা হয়। দুই বছর তিন মাস পুণের ইয়েরওয়াড়া জেলে থাকতে হয় তাদের। সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেশে ফেরার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিলো না। লকডাউনে বাংলাদেশ হাইকমিশন বন্ধ।খোলার পর প্রমাণ করতে হয় তারা বাংলাদেশের নাগরিক কিনা। বিভিন্ন ধরনের জটিলতা বাড়তেই থাকে। কাগজ তৈরি করতে বিলম্বের কারণে দেশে ফিরতে পারছিল না বাংলাদেশি দম্পতি। আদালতের নির্দেশে গত জুন মাস থেকে প্রায় আড়াই মাস মহারাষ্ট্রের ফরাসখানা থানায় অবস্থান করেন তারা। এই থানার পুলিশের হাতেই তারা এক সময় আটক হয়েছিলেন। ৮০ দিন ধরে থানায়ই অবস্থান করেন মন্ডল দম্পতি। থানায় অবস্থানকালে তাদের প্রতিদিনের সব খরচ বহন করতো থানা কর্তৃপক্ষ। গত ঈদে তাদের কিনে দেওয়া হয় নতুন পোশাকও।

অবশেষে দেশে ফেরার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশন এই দম্পতিকে ইমার্জেন্সি ট্রাভেল সার্টিফিকেট দিয়েছে।মন্ডল দম্পত্তির বাড়ি খুলনায়। রোববার পুণে থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে ফেরত পাঠানো হয় তাদের। মুম্বাই থেকে কলকাতার ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়া হয়। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত বাংলাদেশি দম্পতি কোনো জটিলতায় না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে পুণে পুলিশের দুই সদস্যের একটি টিম তাদের সঙ্গে আসে। সীমান্তে এসে কর্তৃপক্ষের হাতে বাংলাদেশি দম্পতিকে হস্তান্তর করা হয়।

XS
SM
MD
LG