যুদ্ধাপরাধসহ নানা ইস্যুতে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কে টানাপড়েন লেগেই ছিল। এখন চরম তিক্ততায় রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাই কমিশনারকে ঢাকায় স্বীকৃতি না দেয়ায় এই সম্পর্কে নতুন করে দেয়াল তৈরি হয়েছে। এগারো মাস আগে হাই কমিশনার রফিউজ্জামান সিদ্দিকীর ঢাকা ত্যাগের পর পাকিস্তান সরকার সাকলাইন সৈয়দাকে হাই কমিশনার হিসেবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী কূটনৈতিক চ্যানেলে তার এগ্রিমো আসে ঢাকায়। কিন্তু ঢাকা থেকে কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় পাকিস্তান পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বার কয়েক তাগাদা পত্র আসে। ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে ডেকেও দেশটির তরফে হতাশা ব্যক্ত করা হয়। তারা বার বারই জানতে চেয়েছে কি কারণে পেশাদার কূটনীতিক সৈয়দার সম্মতিপত্র পাঠাতে ঢাকা অনাগ্রহ দেখাচ্ছে।
সাধারণত ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কোন রাষ্ট্রদূত বা হাই কমিশনারকে স্বীকৃতি না দিতে চাইলে স্বাগতিক দেশ জবাব দান থেকে বিরত থাকে। তখন ধরে নেয়া হয় নিশ্চয়ই তাদের কোন আপত্তি রয়েছে। পাকিস্তান সরকার এটা না জানার কথা নয়। তা সত্ত্বেও তারা তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। বাংলাদেশও তার অবস্থান থেকে এক চুলও নড়েনি। এই অবস্থায় দু’দেশের সম্পর্কে বেশ প্রভাব পড়ে। গত মঙ্গলবার পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যমগুলো খবর দেয়, সাকলাইন সৈয়দাকে ঢাকা গ্রহণ করছে না এটা নিশ্চিত। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কূটনীতিক বলেন, পাকিস্তান কেন বুঝতে চাইছে না বাংলাদেশ কি চায়? একটি ওয়াকেবহাল কূটনৈতিক সূত্রের খবর, গত বছর ৫ই মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলন সংস্থার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ সম্মেলনে সাকলাইন সৈয়দার ভূমিকাকে বাংলাদেশ আগ্রাসী ও নেতিবাচক বলেই ধরে নেয়। এই সম্মেলনে ওআইসি সহকারী মহাসচিব পদে তুরস্ক ও পাকিস্তানের বিরোধিতার কারণে বাংলাদেশ হেরে যায়। এসব কারণেই সম্ভবত সৈয়দাকে স্বীকৃতি জানাতে অনাগ্রহ দেখিয়ে আসছে বাংলাদেশ।