অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

গুম বিষয়ক হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তদন্ত রিপোর্টে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার


বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় এক অভিযানের সময় নিরাপত্তায় নিয়জিত রয়েছেন র‍্যাব সদস্যরা। ফাইল ফটো- এপি
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় এক অভিযানের সময় নিরাপত্তায় নিয়জিত রয়েছেন র‍্যাব সদস্যরা। ফাইল ফটো- এপি

জোরপূর্বক গুম করার অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার অনেক আগে থেকেই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আর সাম্প্রতিক আপত্তি এসেছে সোমবার সংগঠনের রিপোর্টের পর যাতে বলা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর টার্গেটে থাকা ৮৬ জন লোক নিখোঁজ রয়েছেন। এ বিষয়টি স্বাধীনভাবে তদন্তের জন্যে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। 

বাংলাদেশ সরকারের সমালোচক ও অন্যান্যদের গুম হওয়ার বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক তদন্ত রিপোর্টের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ। প্রশ্নসাপেক্ষ এবং অসমর্থিত অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা ওইসব মানুষ গুম হয় এমন তথ্য উল্লেখ করা হয় হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্টে।

জোরপূর্বক গুম করার অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার অনেক আগে থেকেই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আর সাম্প্রতিক আপত্তি এসেছে সোমবার সংগঠনের রিপোর্টের পর যাতে বলা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর টার্গেটে থাকা ৮৬ জন লোক নিখোঁজ রয়েছেন। এ বিষয়টি স্বাধীনভাবে তদন্তের জন্যে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উপ-প্রধান ফেরদৌসি শাহরিয়ার বলেন, “প্রশ্নবিদ্ধ সূত্রের তথ্য নিয়ে করা ওইসব রিপোর্টের বহু উদাহরণ রয়েছে যা বিশ্বাসযোগ্য নয়”।

তিনি বলেন ঐ রিপোর্ট এমন কিছু “অজ্ঞাত লোকের’ সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে করা যাতে রয়েছে নাম উল্লেখ না করা ৬০ জন লোকের সাক্ষাৎকার, ৮১ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বক্তব্য, ৭ জন বেনামি লোকের সাক্ষ্য।

তিনি তার বিবৃতিতে আরও বলেন ঐ গবেষণায় উল্লেখিত ‘সরকার সমর্থিত গুম আর অপহরণ’ এর মধ্যে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে।

শাহরিয়ার বলেন বাংলাদেশ প্রত্যেকটি গুমের ঘটনা তদন্ত করে, তবে যৌক্তিকভাবে বা আইনিভাবে কোন অজ্ঞাত সূত্রকে বিশ্বাস করতে পারে না, যাতে কোনো প্রমাণ ছাড়াই নিরাপত্তা কর্মকর্তা দ্বারা দিনে দুপুরে কারো অপহরণের কথা উল্লেখ করা হয়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মূলত গুমের ক্ষেত্রে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নকে (র‍্যাব) দায়ী করে। র‍্যাবের মুখপাত্রকে ফোন করলে কেউ ফোন ধরেনি এবং ফিরতি ফোনও করেনি। ইসলামি জঙ্গিবাদকে নির্মূল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার র‍্যাবকে কৃতিত্ব দিয়ে থাকে।

২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ১১৫ জনের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ রিপোর্টটি করেছে। তাদের অনেকেই অভিযোগে উল্লেখ করা এসব ঘটনার শিকার বা তাদের পরিবারের সদস্য অথবা প্রত্যক্ষদর্শী।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে জোরপূর্বক গুম বা গুমের জন্যে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়ী করার বিষয়ে খতিয়ে দেখতে কিংবা দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার সম্মুখীন করতে বাংলাদেশ সরকার বার বার অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের তথ্যের বরাত দিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা ৬০০ লোক জোরপূর্বক নিখোঁজের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস গোপন স্থানে আটক থাকার পর ছাড়া পেয়েছেন বা আদালতে হাজির হয়েছেন। অন্যরা মারা পড়েছেন যাদেরকে কর্তৃপক্ষ পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে মৃত্যু বলে দাবি করেছে।

রিপোর্টে ৮৬ জনের নিখোঁজ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে ‘যাদের অনেকেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচক ছিলেন’।

XS
SM
MD
LG