সেলিম হোসেন
আজ ২রা জুন আমেরিকায় পালিত হচ্ছে বার্ষিক অস্ত্র সহিংসতা বিষয়ক সচেতনতা দিবস। বিষয়টি নিয়ে জ্লাটিকা হোকের রিপোর্ট শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন।
গোলাগুলির ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে। অথচ অস্ত্র ক্রয় বিক্রয় ও এর ব্যাবহার নিয়ে রয়েছে এখনো বিভক্তি। একপক্ষ চান অস্ত্র নিয়ন্ত্রিত হোক; অপরপক্ষ করেন বিরোধীতা।
একদিন আগেই ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলাগুলিতে ২ জন নিহত হন। তার আগে গুলির ঘটনা ঘটে শিকাগো ও হিউস্টনে। গত বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে যা জাতিয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
এসব গোলাগুলির বিরুদ্ধে সাধারন মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই পালিত হচ্ছে অস্ত্র সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা দিবস। কমলা রং প্রদর্শনের মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ করা হচ্ছে অস্ত্র সহিংসতার।
তিন বছর আগের ঘটনা। শিকাগোর তরুন শিক্ষার্থীরা তাদের খুন হওয়া সহপাঠীর স্মরণে কমলা রঙ্গের টি শার্ট পরে। কমলা রং মানুষের জীবনের মুল্য প্রকাশের প্রতীক। এর পক্ষে সচেতনতা গড়তে কমলা রং এর পোষাক পরার আহবান, জাতীয় আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে আমেরিকার বহু বিখ্যাত ভবনে কমলা রঙ্গের আলো জ্বালানোর ব্যাবস্থা রাখা হচ্ছে।
অস্ত্র সহিংসতার প্রতি সচেতনতা গড়ার কর্মসূচীর পক্ষ্যে জনপ্রিয় চলচ্চিত্রকার স্পাইক লি বুধবার নিউইয়র্কের এম্পায়ার ষ্টেট ভবনে কমলা রঙ্গের আলো জ্বালান।
স্পাইক লি বলেন, “আমেরিকার ইতিহাসে এটি গুরুত্বপূর্ন মুহুর্ত। এই মহান দেশে সকল মানুষ অস্ত্র সহিংসতার বিপক্ষে দাঁড়াবে এটাই আমার বিশ্বাস। আশা করি সকলেই বলবে যথেষ্ট হয়েছে। এই দেশে গড়ে দৈনিক ৯১ জন মানুষ মারা যান। এর মধ্যে দুই তৃতিয়ংশ আত্মহত্যা ঘটে, যা মানা কঠিন”।
২৫শে মে নিউইয়র্কের এক কনসার্টে গোলাগুলিতে মারা যাওয়া এক ব্যাক্তির ভাই সান্দুক ম্যাক ফ্যাটার বলছিলেন; “মানষিক সমস্যাই মূল কারন; বিশেষ করে কোনো দ্বন্দ্ব বা ঝগড়ার প্রথম প্রতিক্রিয়া হিসাবে যখন কেউ অস্ত্র হাতে তার উত্তর দেয়। পুরোটাই মানষিক ব্যাপার। সমাজে এর বিরুদ্ধে সচেতনতার শিক্ষা দেয়া উচিৎ। ভালো আচার আচরণের শিক্ষা দেয়া দরকার সমাজকে”।
অনেক আমেরিকান বিশ্বাস করেন তাদের নিরাপত্তার জন্যে তাদের কাছে অস্ত্র থাকাটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। ওয়াশিংটনের রাজনীতিক রব শেনেক তাদের একজন। তবে তারই এলাকায় এক ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনার পর তার দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন ঘটেছে।
তিনি বলেন, “প্রতিরক্ষার জন্যে যখন আপনি অস্ত্র তুলে নেবেন; তখন নিশ্চিত আপনি অন্য একজন মানুষকে মারতে যাচ্ছেন। আর ঐ অস্ত্র দিয়ে যদি আপনি অন্য একজন মানুষকে অর্থাৎ আপনার প্রতিপক্ষকে তখন না মারেন তবে ঐ অস্ত্রই আপনার হাত থকে সে নিয়ে আপনাকেই খুন করবে”।
তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্রের আইন আমেরিকানদেরকে অস্ত্র রাখান অনুমতি দেয়; তবে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে খুন করা বিষয়ক নৈতিকতার প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই।