আপনাদের জিজ্ঞাসা আর আমাদের অতিথী বিশেষজ্ঞদের জবাবের এই আয়োজন হ্যালো ওয়াশিংটনে আজকের বিষয় হচ্ছে দেশে বিদেশে সন্ত্রাসবাদ : প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া । রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন
হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী, নিত্য নিঠুর দ্বন্দ্ব;
ঘোর কুটিল পন্থ তার, লোভজটিল বন্ধ ॥
নূতন তব জন্ম লাগি কাতর যত প্রাণী--
কর' ত্রাণ মহাপ্রাণ, আন' অমৃতবাণী,
মানবিক মূল্যবোধের সেই অমৃতবাণী কবে আসবে , কবে মানুষের শুভবুদ্ধি উদয় হবে সেটা এখনকার বিশ্বে , দেশে বিদেশে সর্বত্রই একটি জিজ্ঞাস্য ব্যাপার হয়ে রইল। প্যারিসে সর্বসাম্প্রতিক হত্যা কান্ড , লেবাননে , তুরস্কে , নাইজরিয়ায় মানুষের প্রাণহানি । বাংলাদেশে দেশি-বিদেশীদের ওপর আচমকা আক্রমণ এবং সিরিয়া –ইরাকে প্রাত্যহিক জীবনহানি এ সবই আজকের পৃথিবীর এক করুণ অথচ বাস্তব চালচিত্র। বেশির ভাগ হত্যাকান্ডেরই দায় স্বীকার করছে স্বঘোষিত ইসলামিক স্টেট , আইসিস বা আইসিল , অথবা দাইশ কিংবা আই এস যে নামেই অভিহিত করুন না কেন তারাই এবং তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলো। সন্ত্রাসের জন্য যাদেরকে দায়ী করা হোক না কেন প্রাণ বিসর্জন দিচ্ছেন নিরীহ সাধারণ মানুষ , তাঁরা নিজেরাও জানেন না কেন তাঁরা হতাহত হচ্ছেন , কিই বা তাঁদের দোষ। তরুণ প্রজন্মের একাংশ মগজ ধোলাই হয়ে সন্ত্রাসীতে পরিণত হচ্ছে এবং আরও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে এতে সুনির্দিষ্ট ভাবে ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই রকম এক জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে আমাদের শ্রোতাদের প্রশ্ন আর অতিথীদের জবাবের মধ্য দিয়ে আমরা এই সব সন্ত্রাসী ঘটনার বিশ্লেষণ করছি।
আজ আমাদের অতিথী প্যানেল রয়েছেন ঢাকা থেকে বাংলাদেশের প্রবীণ সাংবাদিক , নিবন্ধকার এবং বিশিষ্ট পর্যালোচক জনাব আবেদ খান।
ঢাকা থেকেই রয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর ইশফাক ইলাহী চৌধুরী । আর এখানে ওয়াশিংটনের অদূরে ম্যারিল্যান্ড থেকে যোগ দিচ্ছেন আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের , স্কুল অফ সেকিউরাটি এন্ড গ্লোবাল স্টাডিজ এর অ্যাডজাঙ্কট ফ্যাকাল্টি ড সাইদ ইফতেখার আহমেদ ।
আমাদের প্যানেলিস্টরা এই অনুষ্ঠানে জঙ্গিবাদের দর্শন তরুণ সম্প্রদায়ের মনে গ্রথিত করার কথা বলেন । তাঁরা বলেন প্রযুক্তিকে কেবল মাত্র দায়ী করা ঠিক হবে না যদিও প্রযুক্তিকে জঙ্গিরা ও ব্যবহার করছে কিন্তু যুগে যুগে সন্ত্রাসবাদ নানান ভাবে ছিল। মধ্যযুগেও ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে সন্ত্রাসবাদকে যৌক্তিকতা প্রমাণের জন্য। তারা বলেন ধর্ম আর রাজনীতিকে অভিন্ন ভাবে দেখা বাঞ্ছনীয় নয় ।
প্যানেলিস্টরা আরও বলেন যে সিরিয়ার সমস্যা ঘটনাকে জটিল করছে। অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে তাঁরা মনে করেন যে আসাদ বিরোধী যে সব দল সেখানে সংগ্রাম করছে , তাদের অনেকেই উগ্রপন্থি এবং তাদের মাধ্যমে ও আইসিসদের অস্ত্র সরবরাহ করা হতে পারে । প্যানেলিস্টরা বলেন যে ধর্মকে ব্যবহার করা অনুচিৎ এটা সত্যি কথা যে ইসলামকে ব্যবহার করা হচ্ছে কিন্তু মুসলমান মাত্রই সন্ত্রাসী নয় । তবে মুসলমানদের ও খোলাখুলি ভাবে এই ধরণের সন্ত্রাসের বিরোধীতা করতে আরও সোচ্চার হতে হবে।