চার সাংবিধানিক আইন বিদ্বানের সাক্ষ্য গ্রহণের পর সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্র্যাট দ্বারা পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট ডনালড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের পরবর্তী পদক্ষেপ আরম্ভ করেছে।
প্রতিনিধি পরিষদের বিচার বিভাগীয় কমিটির আইনপ্রনেতারা গতকালের সাক্ষ্য নেবার পর, যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার প্রতিটি ধাপ খুব সূক্ষ ভাবে নির্ণয় করা হচ্ছে এবং আইনপ্রনেতারা সম্ভাব্য অভিশংসনের দিকে ধীর গতিতে এগোচ্ছেন। প্রতিনিধি পরিষদে পাস হলে, অভিশংসনের এই প্রস্তাব সেনেটে বিচারবিবেচনা করা হবে যে প্রেসিডেন্টকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে কিনা।
প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাট বলছে প্রমাণাদি মোতাবেক তাদের কাছে মনে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ইউক্রেনের সহায়তা আটকে রাখেন।
প্রতিনিধি পরিষদের বিচার বিভাগীয় কমিটির চেয়ারম্যান জেরল্ড ন্যাডলার বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাদের নিরাপত্তা আপোস করতে চেয়েছিলেন। এটি কোনো বিষয় নয় যে প্রেসিডেন্ট ধরা পড়ে গিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে ঐ সাহায্য সহায়তা ইউক্রেনকে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে তিনি বিদেশী সরকারকে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার জন্য তালিকাভুক্ত করেছেন।ন্যাডলার সাংবিধানিক আইন বিদ্বানদের কাছ থেকে গতকাল জানার চেষ্টা করেছেন যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আইন লঙ্ঘন করেছেন কিনা এবং এই কারণে তাকে অভিশংসন করা যাবে কিনা।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নোয়া ফেলডম্যান বলেন,ক্ষমতার অপব্যবহার তখনি হয় যখন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতার কিছু বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করেন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের স্বার্থে নয় ব্যক্তিগত, নির্বাচনী স্বার্থ অর্জনের লক্ষ্যে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার অপরাধ এবং অপকর্মের আওতায় পড়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী এই ধরণের অপরাধ অভিসংশিত হবার মতো।
নর্থ ক্যরোলাইনা ল স্কুলের অধ্যাপক মাইকেল গেরহার্ট বলেন, আমরা যে অপরাধের কথা বলছি তা যদি অভিসংসিত হবার মতো যথেষ্ট না হয় তাহলে অন্য আর কোনো অপরাধই অভিসংসিত হবার মতো নয়। এই ধরণের অসদাচরণকে এমনকি অভিসংশিত হবার থেকে রক্ষা পাবার জন্য, এই ধরণের সংবিধান করা হয়েছে।
তবে গতকালের সাক্ষ্য প্রদানে এক মত পোষণ করেননি জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জনাথান টার্লি। তিনি বলেন, আমার মতে অতীত অভিশংসনের মানদণ্ড অনুযায়ী এই অপরাধ অভিসংসিত হবার মতো নয়। এবং এই অপরাধের কারণে যদি প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে একটি মারাত্মক নজির হয়ে থাকবে এই অভিসংশন।
রিপাব্লিকান আইনপ্রনেতা ডগ কলিন্স বলেন,তিনি বলেন, শুরু থেকেই এই দেশের প্রতি তার ছিল গভীর উদ্বেগ। মনে রাখতে হবে বিদেশী সহায়তা নিয়েও তার উদ্বেগ রয়েছে বিশেষ করে ইউক্রেনের সহায়তা নিয়ে।
অভিশংসনের গুরুতর পদক্ষেপ নেবার বিষয়ে ডেমোক্র্যাটদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সংশয় রয়েছে। তিনি বলেন, এই ধরণের মানুষদের সম্পর্কে আপনার মনে প্রশ্ন জাগে, এরা কি আদৌ দেশকে ভালোবাসে?
ডেমোক্র্যাটদের মতে আগামী ২০২০ সালের নির্বাচনের আগে এই জরুরী কাজ করা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বৃহস্পতিবার বিচার বিভাগীয় কমিটির চেয়ারম্যানকে অভিশংসনের অনুচ্ছেদ মোতাবেক এগিয়ে যেতে বলেছেন। পেলসি বলছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
এই অভিশংসন নিয়ে কথা বলার জন্য সরাসরি যুক্ত হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত বাংলাদেশী আমেরিকান রাদওয়ান চৌধুরী