আজ ৩১শে মে রবিবার পর্যন্ত ভারতে লকডাউন চলছিল। সারা দেশজুড়ে চতুর্থ দফার এই লকডাউন চলতে চলতেই করোনা ভাইরাসে সংক্রমনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে এবং বহু মানুষ এই দেশে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। সুতরাং লোকের মুখে মুখে একটা কথা চলছিল যে দেশের অর্থনীতি যেরকম ভঙ্গুর অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে লকডাউন চললে সেটা একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ার মতন অবস্থায় পৌঁছবে। ও
দিকে হঠাৎ বিধিনিষেধ শিথিল করে দেওয়া হলেও করোনা সংক্রমণ অনেক বেড়ে যাবে। এই উভয় সঙ্কটের মধ্যে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়বে কিনা, তা নিয়ে একটা সংশয় থেকেই যাচ্ছিল। এই অবস্থায় আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে নতুন একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আগামীকাল পয়লা জুন থেকে ধীরে ধীরে সারাদেশে লকডাউন খোলার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। পঞ্চম দফার লকডাউন সীমিত আকারে যদিও থাকছে, তবে সেটা শুধুমাত্র কনটেনমেন্ট জোন বা যেসব জায়গায় সংক্রমণ রীতিমত ভীতিজনক অবস্থায় রয়েছে, সেখানেই মানা হবে। কোথায় কোথায় কোন জায়গাগুলো কনটেনমেন্ট এর আওতায় পড়বে সেটা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার। কিন্তু অন্যান্য দিক থেকে লকডাউন খুলে অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে আগামীকাল থেকেই।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই কিছু পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আগামীকাল থেকে সমস্ত ধর্মস্থান খুলে দেওয়া হবে যদিও তাতে বেশি লোক জমায়েত হতে পারবেন না। ওদিকে কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, ধর্মস্থান খুলে দেওয়া হবে ঠিকই, তবে তা থেকে ৮ই জুন থেকে। শুধুমাত্র ধর্মস্থান বা মন্দির মসজিদ গির্জা নয়, রেস্টুরেন্ট হোটেল শপিং মল ইত্যাদিও খুলে দেওয়া হবে। তবে ক্লাব, বার, জিম, সুইমিংপুল বা সিনেমা হল এখন খোলা হচ্ছে না। আর স্কুল কলেজ বা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও পুরো জুন মাসটা বন্ধ থাকবে। জুলাই থেকে সেগুলো কী ভাবে খোলা যায় সেটা সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার তাদের নিজের নিজের শিক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে ঠিক করবে।
আগামীকাল থেকে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে বেসরকারি বাস চলবে বলে জানানো হয়েছে। এই মুহূর্তে ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে না, তবে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বাসে যতগুলো আসন আছে ততজন যাত্রী নেওয়া চলবে। আজ সকালে তাঁর মন কি বাত বা মনের কথা বলে ভিডিও অনুষ্ঠানটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনার ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকতে দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন। মন কি বাত ভারতের প্রতিটি নিউজ চ্যানেলে লাইভ দেখানো হয়। প্রধানমন্ত্রী গত বছর কয়েক ধরে দেশবাসীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে এটা করে আসছেন এবং আজকে ছিল এর ৬৫ তম অধ্যায়। তাতে তিনি বলেছেন, আমাদের মনে রাখতে হবে করোনা ভাইরাস আমাদের সঙ্গে আরও বহু দিন থাকবে। সুতরাং লকডাউন খোলা হোক বা না হোক, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে প্রতিটি দেশবাসীকে সচেতন থাকতে হবে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে এবং তার থেকে যাতে আর কারও শরীরে সংক্রমণ না ছড়ায়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।