পশ্চিমবঙ্গে গতকাল দুপুর থেকে যে এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, আজ তা আরো ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা আন্দোলনকারীদের দখলে চলে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের কৃষ্ণপুর রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা লালগোলা প্যাসেঞ্জার, হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ও তিনটি লোকাল ট্রেনে বিক্ষোভকারীরা আগুন লাগিয়ে দেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত দাউদাউ করে সেগুলিকে জ্বলতে দেখা গিয়েছে। হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দশটি যাত্রীবাহী বাসে পরপর আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় মহিলা ও শিশুসহ যাত্রীরা প্রাণভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন।
শুক্রবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের ডাক দেওয়া মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে কলকাতাসহ গোটা রাজ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়ে ছিল। তার রেশ ধরে আজ শনিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা তাণ্ডব চালায়। সাঁকরাইল রেল স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে আগুন লাগানো হয়, গতকালের মতো আজো রেল লাইনে জ্বলন্ত টায়ার রেখে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়, অবরোধে আটকে থাকা ট্রেনগুলো ভাঙচুর করা হয়। এসবের ফলে পঞ্চাশটিরও বেশি দূরপাল্লার ট্রেন, সমসংখ্যক মাঝারি পাল্লার ট্রেন ও শতাধিক লোকাল ট্রেন বাতিল করে দিতে হয়েছে। একই রকম বিক্ষোভ চলে রাস্তার উপর টায়ার জ্বেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে আটকে আছে কয়েকশো ট্রাক।
এ সম্পর্কে রয়েছে পরমাশিষ ঘোষ রায়ের আরও একটি প্রতিবেদন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ চলছিল। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর বিল আইনে পরিণত হতেই উত্তর-পূর্ব ভারতের মতো বিক্ষোভের আঁচ এসে পড়ে পশ্চিমবঙ্গে। জেলায় জেলায় শুরু হয় বিক্ষোভ। শুক্রবার বেলা গড়াতেই তা রূপ নেয় তাণ্ডবে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ করুন কিন্তু আইন কেউ হাতে তুলে নেবেন না।