বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ ভারত জনসংখ্যাগত একটি গুরুত্বপূর্ন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। ভারতীয় সরকারের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশটিতে জন্মের হার প্রতিস্থাপন স্তরের নীচে নেমে গেছে। এর মানে হলো, ভারতের জনসংখ্যা ধীর গতিতে বাড়ছে। যদিও ভারতের জনসংখ্যা এই দশকের কোন এক সময় চীনকে অতিক্রম করার কথা।
প্রায় ১.৩৮ বিলিয়ন মানুষের দেশ ভারতের জন্য এটি একটি সুখবর। কারণ দেশটির ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা দীর্ঘকাল ধরে উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা এবং সম্পদের উপর একটি বিশাল চাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই সপ্তাহে ভারতের জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা প্রকাশিত হয়। ঐ সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালে প্রজনন হার ২.০ এ নেমে এসেছে। জনসংখ্যা হ্রাসের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ন সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি নির্দেশ করে যে, মহিলা প্রতি যে দেশগুলোতে ২.১ টির কম সন্তান জন্মগ্রহণ করে, ঐ দেশগুলোর একটি প্রজন্ম নিজেদের প্রতিস্থাপন করার জন্য পর্যাপ্ত সন্তান জন্ম দিচ্ছে না এবং তা জনসংখ্যা হ্রাসের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়।
পপুলেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক পুনম মুত্রেজা বলেছেন, "ভারতের জনসংখ্যার বিস্ফোরণ নিয়ে যে ভুল ধারণা ছিল, তা থেকে দেশটি বের হয়ে এসেছে এবং কিছু নীতিনির্ধারক দুই সন্তান জন্মদানের যে আদর্শ নীতি প্রস্তাব করেছে, তা আমাদের প্রয়োজন। আমরা আমাদের জনসংখ্যা স্থিতিশীল করার দিকে ভালভাবেই অগ্রসর হয়েছি। সুতরাং আমাদের সমস্যার জন্য জনসংখ্যাকে দোষারোপ করার পরিবর্তে, আমাদের অর্জনগুলোকে ত্বরান্বিত করতে হবে এবং তরুণদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং দক্ষতা অর্জনের জন্য বিনিয়োগের দিকে মনোযোগ দিতে হবে"।
গবেষককদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রজনন হার হ্রাসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রজনন হার ছিল ২.২ । গবেষকরা মনে করেন, দেশটিতে দরিদ্রতার মাত্রা হ্রাস এবং পারিবারিক স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের ফলে বিশেষ করে বিস্তীর্ণ গ্রাম অঞ্চলে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ঐ অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।