অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমানবিক চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলে, বিশ্ব নিরাপদ হবে: জন কেরী


যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরী ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমানবিক চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলে, বিশ্ব নিরাপদ হবে, ইরানের জনগনের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, এবং এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আরও সুযোগ – সম্ভাবনার পথ সুগম হবে।

ভয়েস অফ আমেরিকার রিচার্ড গ্রীনের প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত শোনাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার ও সেলিম হোসেন:

ভয়েস অব আমেরিকার পার্সিয়ান সার্ভিসের সঙ্গে দেয়া সাক্ষাৎকারে পররাস্ট্রমন্ত্রী জন কেরী বলেছেন তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে আইনপ্রনেতারা বুঝবেন যে ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে ইরান ও যুক্তরাস্ট্রের নেতৃত্বে ৬ বিশ্ব পরাপশক্তির মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তা অনুমোদনে র্ব্যার্থ হলে সমস্যা পীড়িত মধ্যপ্রাচ্য আবারো সংঘাত ও যুদ্ধ বিগ্রহের মধ্যৈ পড়বে।

“এই চুক্তি না হলে আমি বিশ্বাস করি আয়াতোল্লাহ বলতেন ‘কেনো আমি ওদের সঙ্গে সমঝোতা করবো? কেনো সারা বিশ্বে আমাদের সহকর্মীরা নিষেধাজ্ঞা আরোপ সমর্থন করবে যখন তারা বলে যে ওই নিষেধাজ্ঞা মূলত একটি চুক্তি করার লক্ষ্য নিয়ে আরোপ করা? এখন তারা একটি চুক্তি পেলো এবং তা তুলে নিচ্ছে? ফলে পুরো বিয়ষটিতে ওই অঞ্চলে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে”।

চুক্তিতে মানবাধিকার বিষয় এবং ইরানে আটক থাকা আমেরিকানদের মুক্তির বিষয় না থাকায় সমালোচনার মুখে পড়া প্রশাসনের পক্ষাবলম্বন করেছেন জন কেরী।

“এই চুক্তির বিষয়ে আগেও যেমন বলা হয়েছিল, ইরান ও বিশ্ব সম্প্রদায় কিংবা ইরান ও যুক্তরাস্ট্রের মধ্যে সমঝোতার চেস্টা চলেছে গত ১০ বছর ধরে; কিন্তু এ যাবৎ কোনো সফলতা আসেনি। আর কি বিষয়ে সমঝোতা হওয়া জরুরী তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাছাই করার কোনো সুযোগ আসেনি; পারমানবিক কর্মসূচীর কারনে”।

জন কেরী বলেছেন এই চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে তা ইরানের জন্যে অনেক ভালো হবে।

“এর মধ্যে রয়েছে ভমনের সম্ভাব্যতা, তবে খুব দ্রুত যেটি ঘটবে তা হচ্ছে আর্থিক খাতের ওপর থেকে, ব্যাংকিং ব্যাবস্থার ওপর থেকে এবং পন্য পরিবহনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা। ইরানের খাদ্যবস্তু ও অন্যান্য পন্য বিক্রির অনুমতি দেয়া হবে। পিস্তাচো, কার্পেট ও অপরাপর পন্য বিক্রির অনুমতি পাবে। ফলে এর মাধ্যমে কিছু কিছু খাত আংশিকভাবে উন্মুক্ত হচ্ছে, সব নয়। প্রাথমিক যে নিষেধাজ্ঞা তা বলবৎ থাকবে”।

সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে ওই চুক্তি অনুমোদন করেছে। ওবামা প্রশাসন রোবিবার কংগ্রেসের কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে যাতে ৬০ দিনের সময়সীমার মধ্যৈ ওই চুক্তি পর্যালোচনা করা হয়। চুক্তিটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইরানী আইনপ্রনেতাদেরেকেও অবশ্যই তা অনুমোদন করতে হবে।

এই পারমানবিক চুক্তি যারা সমালোচক তাদের অনেকেই বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ছিল আরও ব্যাপক কিছু বিষয় এই রফার অন্তর্ভূক্ত করা। যেমন – মানবাধিকারের বিষয়, গনতান্ত্রিক সংস্কারসাধন, এবং ইরানে আটক আমেরিকানদের মুক্তির বিষয়।

হ্যাঁ, কেরী অবশ্য বলেছেন, ইরানের সঙ্গে পারমানবিক চুক্তি অবশ্যই প্রধান লক্ষ্য ছিল, তবে তার কথায় – ‘যুক্তরাষ্ট্র কখনোই গনতন্ত্রের কথা, জনগনের অধিকারের কথা ভুলে যাবে না’। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, সরকার ইরানে আটক আমেরিকানদের বিষয়টি উত্থাপন করবে তা বন্ধ হবে না।

জন কেরী আরও বলেছেন যে, পারমানবিক বিষয়টির নিষ্পত্তি করাই এই চুক্তির মুল লক্ষ্য ছিল। কারণ আমরা ওই গোটা অঞ্চলে একটা পরমানু অস্ত্র প্রতিযোগিতার সম্ভাবনায়, হুমকীর সম্মুখীন ছিলাম। এবং সেই পরিস্থিতিতে কিন্তু কারও কোন লাভ হতো না।

তিনি বলেন, তাই আমরা আমাদের অগ্রাধিকার কি সেটাই বিবেচনা করেছি। আমরা অগ্রাধিকারভিত্তিক বিষয়ের ওপরই মনোযোগ দিয়েছি। আমরা পরমানু অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের সম্ভাবনা নির্মূল করেছি।

XS
SM
MD
LG