অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নাগাল্যান্ডে হত্যা: সংসদে ভুল স্বীকার করলেন শাহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো তৃণমূল


নাগাল্যান্ডের মন জেলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে হতাহতের পর সেখানে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকার পাহারায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হয়েছে। (ছবি- এএফপি)
নাগাল্যান্ডের মন জেলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে হতাহতের পর সেখানে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকার পাহারায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হয়েছে। (ছবি- এএফপি)

নাগাল্যান্ডের মন জেলার ওটিং গ্রামে সেনার গুলিতে গ্রামবাসীদের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই বিবৃতিতে শাহ স্বীকার করে নিয়েছেন, প্রথম ভুল তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গি ভেবে কয়লা শ্রমিকদের গাড়িতে গুলি চালায় আসাম রাইফেলসের জওয়ানরা। তাতে আটজন ছিলেন। ঘটনাস্থলেই ছ’জনের মৃত্যু হয়। এরপর গ্রামবাসীরা যখন ওই ঘটনার খবর পেয়ে সেনা ছাউনিতে হামলা চালায়, তাতে এক জওয়ান মারা যান। এরপর আত্মরক্ষায় গুলি চালায় বাহিনী। তাতে সাত জনের মৃত্যু হয়। সংসদে যখন শাহ এই বক্তৃতা দিচ্ছেন তখন প্রায় একই সময় কলকাতায় বসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করল তৃণমূল।

সোমবার শাহ বলেছেন, উচ্চ পর্যায়ের বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার দুঃখ প্রকাশ করছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এসআইটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে।

শনিবার রাতে আসাম রাইফেলসের গুলিতে ওটিংয়ের ১৩ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে একজন জওয়ানও মারা গিয়েছেন। ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটির বিস্তীর্ণ এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

রবিবারই তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছিল সোমবার সকালের বিমানে তাদের একটি প্রতিনিধিদল নাগাল্যান্ডে গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবে। সোমবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছে চার তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব, শান্তনু সেন, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার এবং মিজোরামের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেব জানতে পারেন, জোড়হাট বিমানবন্দরে নেমে তারা অসমের গাড়ি নিয়ে নাগাল্যান্ড ঢোকার যে পরিকল্পনা করেছেন সম্ভব নয়। কারণ, নাগাল্যান্ড সরকার গোটা রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। বাইরে থেকে গাড়ি ঢোকার ব্যাপারেও (ভেহিকল এমবার্গো) নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সুস্মিতা দেব বলেন, এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেই সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন তারা।

কলকাতার একটি হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল বলে, নাগাল্যান্ডে যে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে তার দায় সম্পূর্ণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। এই মুহূর্তে অমিত শাহের পদতযাগ করা উচিত। সংসদে শাহের বক্তৃতা নিয়ে সুস্মিতা বলেন, "ওর কথার কোনও গুরুত্ব নেই। এর আগে মিজোরাম পুলিশ আসামের ছ’জন পুলিশকে গুলি করে মেরেছিল। তখন অমিত শাহ এসআইটি-র কথা বলেছিলেন। সেই রিপোর্ট আজ পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি।"

এদিন অমিত শাহ যখন সংসদে বিবৃতি দিচ্ছেন তখন হাউসে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু করেন কংগ্রেস সাংসদরাও। কংগ্রেসের বক্তব্য, "এই রকম একটা বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে গিয়েছে আর প্রধানমন্ত্রী সংসদে এলেন না। তিনি ভয়ে অধিবেশন এড়িয়ে গিয়েছেন।"

XS
SM
MD
LG