পাকিস্তানের শীর্ষ অসামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আফগান প্রতিপক্ষের সঙ্গে আপোষ আলোচনায় আফগান তালিবানকে রাজি করাতে তারা জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাতে তাঁরা এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন যে লড়াইয়ের মাঠে ইসলামপন্থি বিদ্রোহীদের বিজয়ের পেছনে পাকিস্তানের হাত আছে।
মঙ্গলবার ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেয়া এক লিখিত এক মন্তব্যে মঈদ ইউসুফ বলেন , “ ঘটনার যারা শিকার তাদের দোষী করা থেকে বিরত থাকুন”। তিনি এ বিষয়ে আফগান অভিযোগের জবাব দিচ্ছিলেন যে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী তালিবানকে সমর্থন করা অব্যাহত রেখেছে। তিনি হিসেব করে বলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আফগানিস্তানের যুদ্ধে যোগ দেয়ার জন্য পাকিস্তানে অভ্যন্তরীন জঙ্গিদের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানে ৮০,০০০ ‘এর বেশি লোক হতাহত হয়েছে এবং প্রায় ১৫ হাজার কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
মে মাসের প্রথম দিকে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও নেটোর সৈন্যরা আফগানিস্তান ত্যাগ করা শুরু করে তখন থেকে তালিবান আফগানিস্তানের বহু জেলা এবং অনেকগুলো প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে নিয়েছে এবং আরও দখল করার হুমকি দিচ্ছে।
একাধিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আফগান ন্যাশনাল ডিফেন্স এন্ড সেকিউরিটি ফোর্সেস হয় আত্মসমর্পণ করেছে নয়ত তালিবানের অগ্রযাত্রা এড়াতে পালিয়ে গেছে । কেউ কেউ পাকিস্তান, ইরান এবং তাজিকিস্তানে পালিয়েছে।
পাকিস্তানের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এ সপ্তাহে এক ব্রিফিং’এ , তালিবানের কাউল দখলের সম্ভাবনা এই বলে নাকচ করে দেন যে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর এই ঘটনা প্রতিরোধ করতে ভালো ভাবে প্রশিক্ষিত এবং অস্ত্র -সজ্জিত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তারা বলেন আফগান সামরিক কমান্ডাররা যদি কার্যকর ভাবে তাদের কৌশল ব্যবহার করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে যদি রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকে তাহলে বিদ্রোহীরা আফগান ন্যাশনাল ডিফেন্স এন্ড সেকিউরিটি ফোর্সেস ‘এর উপর চাপ প্রয়োগ করতে পারবে না এবং এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
বিদ্রোহীদের বিজয়ের জন্য আফগানিস্তান পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করছে । তারা পাকিস্তানের মাটিতে তালিবান নেতাদের উপস্থিতি এবং নিরাপদ অবস্থানের অভিযোগ এনেছেন। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি গত মাসেই বলেন যে পাকিস্তান এবং অন্যান্য জায়গা থেকে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে তাঁর দেশে ১০,০০০ জিহাদি প্রবেশ করেছে।
আফগানিস্তানে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারিরা #SanctionPakistan নামে অভিযান শুরু করেছে যেখানে ইসলামি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সমর্থনের অভিযোগের কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেশটিকে শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসলামাবাদ সরকার অব্যাহত ভাবে এই অভিযোগ নাকচ করে আসছে যে তারা তালিবানকে কোন রকম সামরিক সহযোগিতা দিচ্ছে। তারা বরঞ্চ পাকিস্তানে আশ্রয় নেয়্ তিরিশ লক্ষ আফগান শরনার্থীকে দোষারোপ করছে কারণ তাদের মধ্যেই বিদ্রোহী যোদ্ধারা লুকানোর আদর্শ স্থান খুঁজে পাচ্ছে।