অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কারাগারেই থাকতে হচ্ছে পরীমনিকে 


চিত্রনায়িকা পরীমনি
চিত্রনায়িকা পরীমনি

তিন দফা রিমান্ড শেষে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে। আগে চার দফা জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ায় শনিবার নতুন করে তার জামিনের আবেদন করা হয়নি।পরীমনির আইনজীবীরা তার সঙ্গে আইনী বিষয় নিয়ে কথা বলার আবেদন করেছিলেন তবে আদালত এ সুযোগ না দিয়েই তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনিকে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তিনি। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আসামির কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।ঘটনার সঙ্গে আসামির জড়িত থাকার বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। এসব তথ্য যাচাইয়ের স্বার্থে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

বার বার জামিন আবেদন নাকচ হওয়ায় পরীমনি আদালতের এজলাসেই তার আইনজীবীদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আমার জামিনের ব্যবস্থা করুন। এভাবে চললে আমি পাগল হয়ে যাবো।পরীমনির আইনজীবীরাও আদালতে তার অসুস্থতার বিষয়টি তুলে ধরেন।পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী এই প্রতিনিধিকে বলেন, পরীমনি যে মামলার আসামি এ ধরণের মামলায় আসামিরা জামিন পান। চার বার আবেদন করার পরও তিনি কেন জামিন পাচ্ছেন না তা আদালতই ভালো বলতে পারবেন।

ওদিকে শনিবার আদালতে শুনানি চলার সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মজিবুররহমান পরীমনির সঙ্গে আইনী বিষয়ে কথা বলার সুযোগ দেয়ার আর্জি জানান।এসময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু আসামির সঙ্গে দেখা করতে দেয়ার বিষয়ে আপত্তি তোলেন। সাক্ষাতের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় বিকালে একটি প্রিজন ভ্যানে করে আদালতের হাজতখানা থেকে পরীমনিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

ওদিকে পরীমনির ঘটনা এবং সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া কয়েকটি বিষয়ে ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের তরফে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, চলচ্চিত্র জগতের একজন অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নব্যধনিক সমাজের যে চেহারা ফুটে উঠেছে বিষয়টি তাদের গভীরভাবে চিন্তিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে। বিবৃতি দাতারা হলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, আবেদ খান, ফেরদৌসী মজুমদার, সারোয়ার আলী, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, আবদুস সেলিম, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন, গোলাম কুদ্দুছ ও হাসান আরিফ।

পরীমনির মুক্তির দাবিতে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সংস্কৃতি কর্মীরা।ওই কর্মসূচি থেকে তার মুক্তি ও সুবিচার দাবি করা হয়।

গত ৪ঠা আগস্ট পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।পরে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। গত ৫ই আগস্ট পরীমনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।১০ই আগস্ট দ্বিতীয় দফায় তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ১৯শে আগস্ট তৃতীয় দফায় তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ১৩ই জুন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করে আলোচনায় আসেন পরীমনি। ঢাকার বোট ক্লাবে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছিলেন দাবি করে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছিলেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে। কিছু দিন জেল খাটার পর ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ এখন জামিনে আছেন।ওই মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েনের সরকারি বাসায় পরীমনির ১৮ ঘণ্টা অবস্থানের ঘটনা নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়।ওই কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

XS
SM
MD
LG