অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পাঠ্যবইয়ে বর্ণবিদ্বেষের পরিচয়


বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু, যাকে হত্যা বলে অভিহিত করা হয়েছে, তাতে সারা আমেরিকা তোলপাড়। প্রতিবাদের বন্যায় ভেসে গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্য, আর সেইসঙ্গে সারা পৃথিবীতে ধ্বনিত হয়েছে ধিক্কার। এইরকম একটা অবস্থায় ভারতে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে পুরসভার সরকারি অনুদান পাওয়া একটি মেয়েদের স্কুলে ঠিক একই রকম বর্ণবিদ্বেষের পরিচয় পাওয়া গেলো প্রাথমিকেরও আগের শ্রেণীর একটি পাঠ্যবইয়ে। তবে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে ওটি পাঠ্যবই নয়, বর্ণ পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য স্কুলের নিজস্ব পছন্দের একটি বই। বইটিতে ইংরেজি অক্ষরের সঙ্গে পরিচয় করাতে গিয়ে লেখা হয়েছে, আগলি অর্থাৎ কুৎসিত। তার ওপরে ছবি দেওয়া রয়েছে একটি কৃষ্ণাঙ্গ ছেলের। এই বইটি দেখা মাত্র স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। বেশ কিছু অভিভাবক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কৈফিয়ৎ তলব করেন। তাঁরা জানতে চান, ছোট ছোট শিশুদের যে বই পড়ানো হবে, যাতে ইংরেজি বর্ণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে, সেখানে তাদের কোমল মনে প্রথম থেকেই কালো মানে কুৎসিত, এই ধারণাটা ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কেন? এই ব্যাপারটি গতকাল ক্রমশ সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং তা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কানে যায়। ব্যাপারটা শোনার পর গতকালই সন্ধ্যেবেলায় পার্থবাবু তাঁর নাকতলার বাড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ধরনের বর্ণবিদ্বেষী মনোভাব কখনোই সমর্থন করে না, পাঠ্যবই হিসেবে এটি অনুমোদিত নয় এবং এই বইটি সরকারি ছাপাখানায় ছাপাও হয়নি। বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুলের কর্তৃপক্ষ বইটি পছন্দ করেছেন নিচু ক্লাসে পড়ানোর জন্য। তাঁদের কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়েছে কেন তাঁরা এ কাজ করেছেন জানতে এবং আপাতত তাঁদের সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কোনও স্কুলে যাতে এই বই পড়ানো না হয় তারও নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। পার্থবাবু জানিয়েছেন, স্কুলের দুই শিক্ষিকা শ্রাবণী মল্লিক ও বর্ণালী রায়কে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

দীপংকর চক্রবর্তী, ভয়েস অফ আমেরিকা, কলকাতা

please wait

No media source currently available

0:00 0:02:19 0:00
সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG