অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রাফাল মামলায় কোনও রকমের হস্তক্ষেপ করা হবে না: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট


সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার এই সিদ্ধান্ত জানায়। রাফাল বিমান দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত। তাই তা কেনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা ঠিক নয়। কেন্দ্র চুক্তির বিষয়ে যে সিল করা খাম সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয় তা দেখে তাঁরা সন্তুষ্ট। এই চুক্তির সময় বিশেষ কাউকে কোনও রকমের ব্যবসায়িক সুবিধা দেওয়া হয়েছে, এরকম প্রমাণ পাওয়া যায়নি, বলেছেন প্রধান বিচারপতি।

এ দিন আদালত আরও জানায়, রাফাল বিমান সংক্রান্ত মামলায় বিমানের দাম নিয়ে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা অমূলক। কারণ, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে খরচের উপর সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলতে পারে না। এ ছাড়াও ১২৬টির বদলে কেন ৩৬টি বিমান কেনা হয়েছে, সে সম্পর্কে প্রশ্ন করাও উচিত নয়। অর্থাৎ কংগ্রেসের তরফে রাফাল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্তের জন্য যে পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল তা এ দিন খারিজ করে দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।

এই রায় ঘোষণার পর কংগ্রেসের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, দেশের সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছে তা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। অনেক বিষয় এড়িয়ে গিয়েছেন বিচারপতিরা। এমনকী সিল করা খামে কেন্দ্রের তরফে কী জানানো হয়েছে, তাও কেউ জানেন না। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ”আমরা জানতাম এই রায় হবে। আমরা নিশ্চিত ছিলাম। রাফাল চুক্তিতে কোনও রকমের দুর্নীতি নেই। রাফাল নিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। কিন্তু সত্য বেশিদিন চাপা থাকে না।”

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার ফরাসি কোম্পানি দাসোর সঙ্গে চুক্তি করেছে ৩৬টি যুদ্ধবিমান কেনার ব্যাপারে। আর এই চুক্তিতে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল। এই যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল দ্বিতীয় মনমোহন সিং সরকারের সময়। ২০১৬ সালে নরেন্দ্র মোদীর সরকার বিষয়টিকে চূড়ান্ত রূপ দেয়।

কংগ্রেসের অভিযোগ, ইউপিএ সরকারের সময়ে যে দামে যুদ্ধবিমান কেনার কথা হয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি দামে কেনা হচ্ছে। নাম জড়ায় আম্বানিদের। হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্যালস লিমিটেড (হ্যাল)-এর মতো সরকারি সংস্থাকে বরাত না দিয়ে ফ্রান্সের কোম্পানিটি সামরিক ক্ষেত্রে অনভিজ্ঞ রিলায়েন্সকে কেন বরাত দিল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী সরাসরি এই দুর্নীতিতে প্রধানমন্ত্রীর জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি, রাফাল চুক্তি করে মোদী তাঁর বন্ধু আম্বানিকে উপহার দিয়েছেন। রাফালে কী চুক্তি হয়েছে? আসল দাম কত? আম্বানিদের সংস্থাকে বরাত দেওয়া কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, নাকি স্বাধীনভাবেই বরাত পেয়েছে তারা? এই রকম প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়ে একাধিক আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে।

কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের নিরাপত্তার যুক্তিতে সেই উত্তর না দেওয়ায় আদালত স্পষ্ট বলে, কেন্দ্রের উচিত হলফনামা দিয়ে বিষয়টি জানানো। তারপরেই সব প্রশ্নের উত্তরে রিপোর্ট সিল বন্ধ খামে করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে জমা দেয় কেন্দ্র। সেই বিষয়েই এ দিন নিজেদের সিদ্ধান্ত জানালো শীর্ষ আদালত। সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী প্রচারেও রাফাল নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। তাই সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের সিদ্ধান্তের পর কেন্দ্র যে বড় স্বস্তি পেল তা বলাই বাহুল্য।

please wait

No media source currently available

0:00 0:01:22 0:00

XS
SM
MD
LG