অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জুলহাস ও তনয়ের হত্যার দায়ে আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত


ইউএসএআইডির ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়
ইউএসএআইডির ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়

বাংলাদেশের একটি আদালত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়কে হত্যার দায়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।

মঙ্গলবার দেয়া রায়ে আদালত এই হত্যা মামলার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা ৮ অভিযুক্তের মধ্যে অপর দুই জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছে। ঢাকার সন্ত্রাস দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি হচ্ছে সেনাবাহিনীর চাকরীচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেন, মোজাম্মেল হোসেন , আরাফাত রহমান , শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ। তাদের সবাইকে মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আদালত যাদের খালাস দিয়েছে তাঁরা হলো সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও জুনায়েদ আহমেদ। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে চাকরীচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন পলাতক রয়েছে।খালাস পাওয়া অভিযুক্ত দুই জন সাব্বিরুল হক চৌধুরী এবং জুনাইদ আহমদও পলাতক। তবে মামলার বাকি চার আসামি যারা কারাগারে আটক আছে আদালতে তাদের উপস্থিতিতেই বিচারক তাঁর রায় ঘোষণা করে।

২০১৬ সালের ২৫শে এপ্রিল ঢাকা মহানগরীর কলাবাগান এলাকার লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে প্রবেশ করে সমকামী অধিকার কর্মী হিসেবে পরিচিত জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব তনয়কে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পর জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা এবং ওই থানার এসআই মোহাম্মদ শামীম পৃথক একটি অস্ত্র আইনের মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১২ই মে আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম।

এরপর গত বছরের ১৯ শে নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। নয় মাস যাবত ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ এবং অন্যান্য বিচারিক কার্যক্রম শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণা করল। সংবাদ মাধ্যমের খবরে রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে দণ্ডিত ছয় আসামির সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য হিসাবে জুলহাজ ও তনয়কে হত্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সেজন্য ৬ আসামিকে একই সাজা দেয়া বাঞ্ছনীয় হবে কারণ আসামিরা বেঁচে থাকলে আনসার আল ইসলামের বিচারের বাইরে থাকা সদস্যরা একই অপরাধ করতে উৎসাহী হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে বলে খবরে বলা হয়। এতে রায়ের বরাতে বলা হয়েছে এ কারণেই উক্ত আসামিরা কোনও সহানুভূতি পেতে পারে না।

খবরে আরও বলা হয়েছে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পরও আদালতে হাজির থাকা চার আসামীর কোনও ধরনের অনুশোচনা দেখা যায় নাই।এতে বলা হয় রায় ঘোষণার পর আসামিরা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন আমাদের কোনও অনুশোচনা নাই কারণ সব আল্লাহর ইচ্ছা।

খবরে আরও বলা হয়েছে জুলহাস মান্নান ও মাহবুব তনয়ের হত্যা কাণ্ডে যে ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে চার জন চাকরীচ্যুত মেজর জিয়া, মোজাম্মেল, আরাফাত ও আকরাম বিজ্ঞান মনস্ক লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলাতেও মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এতে বলা হয়েছে অস্ত্র আইনের মামলাটি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে।

XS
SM
MD
LG