অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আশ্রয় প্রার্থীদের প্রতি আরও ভালো ব্যবহার করার আহ্বান দক্ষিণ কোরিয়ার অধিকার কর্মীদের  


তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর সেখান থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে আসা আফগান শরণার্থী। (ফাইল ফটো- এএফপি)
তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর সেখান থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে আসা আফগান শরণার্থী। (ফাইল ফটো- এএফপি)

সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় আশ্রয় প্রার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের প্রেক্ষিতে অধিকার কর্মীরা সেখানকার কাগজপত্রবিহিন অভিবাসীদের প্রতি ভালো আচরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীতি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান অভিবাসন নীতি অনুযায়ী যাদের আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তারাসহ বহিষ্কার আদেশ পাওয়া যে কাউকে অনির্দিষ্টকালের জন্যে অন্তরীণ রাখা যাবে । অভিবাসন আইনের ধারা ৬৩ এর উপধারা ১ অনুযায়ী শরণার্থী অধিকার গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে প্রাসঙ্গিক আইনি ভাষা সংশোধনের কথা বলে আসছে যা তারা শাস্তিমূলক বলে মনে করেন, যাতে আশ্রয় প্রার্থীদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। আটক কেন্দ্রগুলিতে দুর্ব্যবহারের খবর প্রকাশ পাওয়ার কারণে আইন সংশোধনের আন্দোলন নতুন গতি সঞ্চার করতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে জাতিগোষ্ঠীগত বিচারে সমজাতিক দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় অভিবাসিদের অধিকার প্রায়শই অবহেলিত যদিও এখনো সেখানে মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ বিদেশী। সরকারী তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালে দক্ষিণ কোরিয়া মাত্র ০.৪ শতাংশ শরণার্থী অবেদন গ্রহণ করে যা অন্যান্য উন্নত দেশের গড় হিসাবের তুলনায় অনেক কম। আটক কেন্দ্রে আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের সর্বসাম্প্রতিক উদাহরণ ২৩শে ডিসেম্বরে ঘটা একটি ঘটনা। সোওল থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে হওাসেওং এর একটি অভিবাসন ডিটেনশন সেন্টারে দীর্ঘ সময় আটক থাকা একজন আশ্রয় প্রার্থী টয়লেট থেকে সিরামিকের একটি টুকরো ভেঙ্গে নিজের হাত কেটে ফেলে এবং পরে আহত অবস্থায় তাকে জরুরি চিকিৎসা নিতে হয়। ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের সরকারী তথ্য অনুসারে বহিষ্কারের প্রক্রিয়ায় সাধারণত ১৫ দিন লাগার কথা। তবে দ্রুত প্রত্যাবাসনের অবস্থা না থাকায় সরকারের তরফ থেকে নিয়মিত সময় বাড়ানো হয়েছে। ফলে কিছু কিছু ব্যক্তি চার বছর আট মাস পর্যন্ত আটক কেন্দ্রে কাটিয়েছেন বলে জানান অভিবাসন বিষয়ক অধিকার কর্মীরা। সেপ্টেম্বরে ডিটেনশন সেন্টারের এক গোপন ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় মরক্কোর এক আশ্রয় প্রার্থী একাকী একটি সেল’এ হাত পা বাঁধা অবস্থায় মাটিতে শোয়া। তার আইনি প্রতিনিধি জানান তার ওপর নির্যাতন করা হয়েছে।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সোওল প্রশাসনিক আদালত এক রুলিং জারি করেন যাতে ৬৩ ধারার ১ নম্বর উপধারার সাংবিধানিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় যাতে সরকারী কর্তৃপক্ষকে এখনও পর্যন্ত বহিষ্কার আদেশ পাওয়া লোকজনদেরকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্তরীণ রাখার অনুমতি দেয়া আছে।

২০১৮ এবং ২০১৯ সালে পর্যালোচনার পর এই আইনটি তৃতীয়বারের মতো সাংবিধানিক আদালতের বিবেচনায় রয়েছে। আগামী মাসে রায় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

XS
SM
MD
LG