টানা দুই দিন ভাসানচর ঘুরে দেখেছেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। তাঁদের আশ্রয়ণ প্রকল্প সম্পর্কে একাধিক তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ নৌ বাহিনী। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে ভাসানচরের বাস্তব অবস্থা। বিশেষ করে শক্ত আবাসন, ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও বেড়িবাঁধদেখিয়েছেন গুরুত্বের সাথে। ধারণা দেয়া হয়েছে- কোন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগে দ্বীপের কি অবস্থা হতে পারে। ঘুর্ণিঝড়ের সময় বেড়িবাঁধ কতটুকু কার্যকর হবে এবং ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো কিভাবে শরণার্থীদের রক্ষা করবে।
ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক কমোডোর রাশেদ সাত্তার জানান, ভাসানচর সম্পর্কে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। আগ্রহের সাথেই সবকিছু দেখছেন এবং জানার চেষ্টা করছেন প্রতিনিধি দল। রোহিঙ্গাদের সাথেও নিজেদের মতো করেই কথা বলছেন। আশ্রয়ণেরঘরে ঘরে গিয়ে জানার চেষ্টা করছেন সবকিছু।
ভাসানচরে বসবাসকারী আমসার উল্লাহ জানিয়েছেন, শুক্রবার তার ঘরে গিয়েছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এসময় প্রতিনিধি দলের সাথে কেবল একজন অনুবাদক ছাড়া সরকারী কোন প্রতিনিধি ছিলেন না। সে কেমন আছে, কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে স্বেচ্ছায় স্থানান্তর হয়েছে কিনা, সেযেসব ব্যবসা বাণিজ্য করছে- সেগুলো কিভাবে করছে- এরকম বিভিন্ন বিষয় জানতে চেয়েছিলেন তার কাছে।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জীবন-যাপন পর্যবেক্ষণ করেছেন নিবিড়ভাবে। রোহিঙ্গাদের সাথে আড্ডা দিয়েছেন, গান শুনেছেন, ফুটবলও খেলেছেন কেউ কেউ।
ইউএনএইচসিআর’র বাংলাদেশের সহকারী প্রতিনিধি ফুমিকো কাশিওয়ার নেতৃত্বে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলটি বুধবার বিকেলে ভাসানচরে পৌঁছেন। তিনদিনেরসফর শেষে ১৮ জনের দলটি শনিবার দুপুরে ভাসানচর ত্যাগ করবেন।
ইউএনএইচসিআর'র একজন মুখপাত্রজানিয়েছেন, সফর শেষে ভাসানচর আশরণ প্রকল্প সম্পর্কে মূল্যায়ন করা হবে।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে প্রায় ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে ইতোমধ্যে ভাসানচরে স্থানান্তর করেছে বাংলাদেশ সরকার। আগামীতে আরও রোহিঙ্গাকে সেখানে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
শুরু থেকেই ভাসানচরেজলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল জাতিসংঘ।
বাংলাদেশ সরকার গত বছরের ডিসেম্বরে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু করে। সেখানে প্রায় ৪০টি দেশীয় বেসরকারিউন্নয়ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত জাতিসংঘের কোন সংস্থা মানবিক সেবা দেয়া শুরু করেনি ভাসানচরে।
রোহিঙ্গা স্থানান্তরের পর ভাসানচরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এটি দ্বিতীয় সফর। এর আগে ভাসানচর পরিদর্শন করেছিলেন মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির একটি প্রতিনিধি দল।