অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার প্রতিশোধের অঙ্গীকার ইরানের: বিশ্ব জুড়ে প্রতিক্রিয়া


মধ্যে প্রাচ্যের কর্মকর্তারা ইরানের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। শুক্রবার ইরাকে ড্রোন হামলায় কুদস বাহিনীর সামরিক প্রধান, জেনারেল কাসেম সোলাইমানীর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে ইরান কোথায় হামলা চালাবে, তা কেউ জানেনাI তবে অনেকের বিশ্বাস তেহরান সে ধরণের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেবে নাI সমীক্ষকেরা হুশিয়ার করে দিয়েছেন যে সিরিয়া, লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনে তারা যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারেI যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্রবর্গ অভিযোগ করেছেন যে, জেনারেল সোলাইমানীকে নির্মূল করার আগে এই পরিকল্পনা সম্পর্কে তাদের কাছে আগাম কোনো হুঁশিয়ারি দেয়া হয় নিI প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুশিয়ার করে দিয়েছেন, যে ইরান যদি কোনো পাল্টা হামলা চালায়, তবে শনাক্তকৃত ৫২টি লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালানো হবে, যা হবে দ্রুত এবং শক্তI

ব্রিটিশ সামরিক প্রধানরা ডাউনিং স্ট্রিট কে পরামর্শ দিয়ে বলছেন, ইরাকের সীমান্তে যে ৪০০ ব্রিটিশ সেনা রয়েছে, এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে যে এক হাজারের বেশি সেনা রয়েছে, আরও বাড়তি সেনা পাঠিয়ে তাদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে। কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে ইরাকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনিকে আরও ভারী অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করার নির্দেশ দিচ্ছেন, যারা সেখানে ব্রিটিশ কূটনীতিকদের ইরানের পক্ষ থেকে কোন প্রতিশোধমূলক হামলার হাত থেকে রক্ষা করবে। নিহত সুলেইমানিকে ওয়াশিংটন এবং লন্ডন একজন সন্ত্রাসী প্রধান বলে বিবেচনা করত। লন্ডন আশঙ্কা করছে যে ইরানের তরফ থেকে বাগদাদে ব্রিটিশ দূতাবাসের উপর হামলা চালিয়ে ব্রিটিশ নাগরিকদের হত্যা অথবা অপহরণ করা হতে পারে। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন বল্লাসে রবিবার উপসাগরীয় অঞ্চলে দুটি ব্রিটিশ রয়েল নেভি’র রণ তরীকে সেখানকার তেলবাহী জাহাজগুলিকে যাতায়াত করার সময় নিরাপত্তায় সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, ইরান পশ্চিমী কোন জাহাজ ছিনতাই অথবা ডুবিয়ে দিতে পারে। একজন পদস্থ ব্রিটিশ কর্মকর্তা বলেছেন, আমাদের দু’স্তরের পরিকল্পনা রয়েছে এবং ওই অঞ্চলে আমাদের বাহিনীকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডস আমেরিকার পথ অনুসরণ করেছে এবং তার নাগরিকদের ইরাক ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যেখানে শনিবারে বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের কাছে রকেট হামলা হয়েছিল। ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্ররা সোলায়মানির বিরুদ্ধে রকেট হামলায় হতাশা প্রকাশ করেছে পাশাপাশি এও স্বীকার করেছে যে, তিনি সরাসরি সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও শনিবার ব্রিটেন এবং অন্যান্য ইউরোপীয় মিত্ররা "আমার আশানুরূপ সহায়তা করেনি”- উল্লেখ করে বলেনঃ ব্রিটিশ, ফরাসী, জার্মান সবাইকে বুঝতে হবে যে, ইউরোপে জীবন রক্ষার্থে আমরা কী করেছি।"

ইস্রায়েলি সামরিক প্রধানরা তাদের প্রতিরক্ষা জোরদার করছেন এবং এই অঞ্চলে ইরানের মাস্টার-ফিক্সার এবং ইরানের অভিজাত কুডস ফোর্সের প্রধান সোলাইমানিকে হত্যার বিষয়ে হিজবুল্লাহর কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া জানাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

শনিবার লেবাননের এক হিজবুল্লাহ আধিকারিক, ইরানের প্রতি জোরদার সমর্থন করে ক্রুদ্ধ হুমকির সুরে কঠোর প্রতিশোধের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তার হুমকি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনিইয়ের কথায়ও প্রতিধ্বনিত হয়েছে, যিনি বলেছেন যে তেহরান তার ব্যক্তিগত বন্ধু এবং "শহীদ" বলে অভিহিত করে সোলাইমানি হত্যার "কঠোর প্রতিশোধ" নেবে।

অন্যদিকে, ইরাকে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫,০০০ সৈন্যদের ইরাক ছাড়া করতে দেশটির সংসদ সদস্যরা এক প্রস্তাবে সই করেছেন। রবিবার বিশেষ এক অধিবেশনে ১৭০ ইরাকি আইনপ্রণেতা যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সরাতে নিজ সরকারের কাছে ওই প্রস্তাবের মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছেন।

XS
SM
MD
LG