অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকারোক্তিঃ কাবুলে সর্বশেষ ড্রোন হামলাটি ছিল 'এক মর্মান্তিক ভুল'


আফগানিস্তানের কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলার পর একটি বাড়ির ভেতর ক্ষতিগ্রস্ত একটি গাড়ির ছবি তুলছেন আফগানিস্তানের সংবাদকর্মীরা। রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১।
আফগানিস্তানের কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলার পর একটি বাড়ির ভেতর ক্ষতিগ্রস্ত একটি গাড়ির ছবি তুলছেন আফগানিস্তানের সংবাদকর্মীরা। রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১।

আফগানিস্তানের উদ্ধার অভিযানের শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো একটি ড্রোন হামলায় কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালাতে প্রস্তুত কোন সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়নি বরং একজন মানবাধিকার কর্মী ও সাত শিশুসহ ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

শুক্রবার ঐ অঞ্চলের যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর কমান্ডারের কাছ থেকে পাওয়া এক স্বীকারোক্তিতে এই তথ্য জানা যায়। এর আগেই স্থানীয় লোকদের দাবি এবং সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনের ফলে সামরিক তদন্ত শুরু হয়।তথ্য অনুসারে ২৯ আগস্টে যে হামলা চালানো হয় সে সম্পর্কে আগে থেকে কখনই কোন হুমকি ছিল না।

জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি, কাবুলে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন।
জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি, কাবুলে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ "ফ্রাঙ্ক" ম্যাককেঞ্জি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে পেন্টাগনে সাংবাদিকদের বলেন, "আমাদের আন্তরিক বিশ্বাস ছিল যে এই আক্রমণ আমাদের বাহিনী এবং বিমানবন্দরে আফগান নাগরিক যাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল, তাদের অনিবার্য হুমকি রোধ করতে পারবে। এখন আমাদের তদন্তের ফলাফলে বেরিয়ে এসেছে যে হামলাটি একটি মর্মান্তিক ভুল ছিল।"

আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সহযোগী, যা আইএস-খোরাসান নামেও পরিচিত, তার সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার করে ম্যাককেঞ্জি আরও বলেন, "আমরা মূল্যায়ন করে দেখেছি, যে বাহনটি বা যারা মারা গেছে তারা কেউ আইসিস -কে’এর সাথে যুক্ত ছিল।"

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনও এই ভুল হামলার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।

অস্টিন এক বিবৃতিতে বলেন,"প্রতিরক্ষা বিভাগে কর্মরত নারী-পুরুষদের পক্ষ থেকে, আমি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা ক্ষমা চাইছি এবং এই ভয়াবহ ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করব।"

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিমান হামলার পক্ষ সমর্থন করা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর জন্য এই ক্ষমা চাওয়া এক নাটকীয় পরিবর্তন।

হামলার মাত্র কয়েক দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠতম সামরিক কর্মকর্তা, জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি হামলাটিকে "ন্যায়সঙ্গত" বলে সমর্থন করেন।

পহেলা সেপ্টেম্বর মিলি পেন্টাগনের সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে জেনেছি যে নিহতদের মধ্যে অন্তত একজন আইসিসের সহযোগী ছিল।পদ্ধতিগুলি সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়েছিল।"

তারপরও, আফগানিস্তানের ভূমি থেকে পাওয়া তথ্য ভিন্ন কথা বলছিল -যে এক আইএস-খোরাসান সহযোগীকে হত্যা করার পরিবর্তে, যুক্তরাষ্ট্রের ঐ ড্রোন হামলায় ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক নিউট্রিশন অ্যান্ড এডুকেশন ইন্টারন্যাশনালের একজন সাহায্য কর্মী এজমারাই আহমদী নিহত হন যিনি যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের জন্য আবেদন করেছিলেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহত অন্যান্যদের মধ্যে আহমদীর মেয়ে, ভাতিজা এবং ভাতিজিও রয়েছে।

XS
SM
MD
LG