যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্টে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন, বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড, খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তার, সংবাদ মাধ্যমে সেন্সরশীপ, খেয়াল-খুশিমতো গ্রেপ্তারসহ নানা বিষয় স্থান পেয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বুধবার রাতে সারা বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ রিপোর্ট প্রকাশ করেন।
এই রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে আইন-বহির্ভুত বা খেয়ালখুশি মতো হত্যাকান্ড ঘটে। জোরপূর্বক গুম করা হয়। নির্যাতনও করা হয়। বেআইনিভাবে আটক করা হয়। জেলখানায় কঠোর আর জীবনের প্রতি হুমকি এমন পরিবেশ বিরাজমান। বেআইনিভাবে হস্তক্ষেপ করা হয় গোপনীয়তায়। আরোপ করা হয় সেন্সরশীপ। বন্ধ করে দেয়া হয় ওয়েবসাইট। শান্তিপূর্ণ সমাবেশেও রয়েছে বিধি-নিষেধ। এনজিও কার্যক্রমে নানা জুট-ঝামেলা রয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুপস্থিত। সমকামী নারী ও সমকামী পুরুষের স্বাধীনতা ভালো চোখে দেখা হয় না। ট্রেড ইউনিয়নের অধিকারও সীমিত।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বলা হয়, অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনজ্ঞ মনে করেন এটা হলো নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে তাকে সরিয়ে রাখার একটি রাজনৈতিক কৌশল। তার জামিন পাওয়ার আবেদনে আদালত ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। একই পরিস্থিতিতে একজন অভিযুক্ত সাধারণ মানুষ তাৎক্ষণিক জামিন পেয়ে যান।
রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান প্রেসসহ সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। কিন্তু সরকার সেই অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা উল্লেখযোগ্যভাবে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কড়া সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, স্বাধীনতাকে গলা টিপে ধরতে ও মুক্ত মত প্রকাশকে অপরাধ হিসেবে দেখার জন্য এই আইন করা হয়েছে।
বিগত সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়, এটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। বাছ-বিচারহীনভাবে ব্যালট বাক্স ভর্তি ও বিরোধী দলীয় নির্বাচনী এজেন্ট ও ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশের আইনে দুর্নীতির দায়ে শাস্তির বিধান থাকলেও সরকার ঐ আইনের কার্যকর প্রয়োগ করছে না। রিপোর্টে বলা হয়, সংবিধানে জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত করা হলেও বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড ঘটেই চলেছে।