যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া এবং নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোয়ন প্রার্থিদের প্রথম দফা ভোট দেওয়ার আগে , সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে যে আমেরিকানরা যে সব বিষয় নিয়ে ভাবছেন , তাতে একটা বড় রকমের পরিবর্তন এসছে। অন্য সময়ের নির্বাচন থেকে বর্তমানের এই নির্বাচনে ইস্যুগত পরিবর্তন সম্বন্ধে ভয়েস অফ আমেরিকার সংবাদদাতা জিম ম্যালনের এই প্রতিবেদন । পড়ে শোনাচ্ছেন আনিস আহমেদ
হাল আমলের জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটদাতাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের শীর্ষে রয়েছে সন্ত্রাসবাদ এবং জাতীয় নিরাপত্তা। বিশেষত সিরিয়ার যুদ্ধ এবং কথিত ইসলামিক স্টেটকে মোকাবিলা করাটা এখন হোয়াইট হাউজের সম্ভাব্য বাশিন্দাদের মধ্যে এক তুমূল বিতর্কের বিষয় হয়ে রয়েছে। এই দুটি বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে। আর এ সব বিতর্কে লক্ষ্য করা গেছে এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের মধ্যে তীক্ষ্ণ মতভেদ রয়েছে।
রিপাবলিকান দল থেকে শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বি ডনাল্ড ট্রাম্প , ইসলামিক স্টেট এর জিহাদিদের নির্মূল করার ব্যাপারে তাঁর সঙ্কল্প প্রকাশ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসী আক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখার জন্য একটি জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
ডনাল্ড ট্রাম্প বলেন আমাদের কঠোর হতে হবে , শক্তিশালি হতে হবে। জাতি হিসেবে এখন আর আমাদের কেউ সম্মান দিচ্ছে না এবং যে পরিমাণ মর্যাদা আমাদের প্রাপ্য সেটাও আমরা পাই না। কাজেই সেই অবস্থানে আমরা দ্রুত ফিরে না গেলে , আমরা দূর্বল থেকে দূর্বলতর হতে থাকবো এবং শেষে খসে পড়বো। আমরা সেটা হতে দিতে পারিনা।
ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি , টেক্সাসের সেনেটর টেড ক্রুজ , বিমান আক্রমণ সমর্থন করেন । তিনি বলছেন এই মূহুর্তে ওবামা প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ বার বিমান আক্রমণ চালাচ্ছেন। এটা লোক দেখানো পররাষ্ট্র নীতি। আমাদেরকে আমাদের প্রচন্ড বিমান শক্তি ব্যবহার করতে হবে , আমাদেরকে কুর্দিদের অস্ত্র দিতে হবে এবং আইসিসরা যেখানেই থাকুক , সেখানে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে এবং তাদের হত্যা করতে হবে।
তবে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বি ফ্লোরিডার সেনেটর মার্কো রুবিওর যুক্তি হলো , গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে স্থল সেনা। রুবিও বলছেন , বিমান আক্রমণ তাদের পরাস্ত করার একটা প্রধান উপায় কিন্তু তাদেরকে পরাজিত করতে হবে স্থলেও এবং সেই জন্য প্রয়োজন স্থল বাহিনী আর সেই স্থলবাহিনীতে মূলত থাকবে সুন্নি আরবরা।
রুবিও সিরিয়ায় সরকার পরিবর্তনের পক্ষে তবে ক্রুজ এবং তাঁর দলেরই রিপাবলিকান প্রতিদ্বিন্দ্ব র্যান্ড পল তা মনে করেন না।
ও দিকে ডেমক্র্যাটিক দল থেকে মনোয়নপ্রার্থীদের মধ্যে যিনি শীর্ষে রয়েছেন, সেই হিলারি ক্লিন্টন ও , ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসী সামরিক অভিযানের পক্ষে তবে তিনি বিপুল সংখ্যক আমেরিকান সৈন্য ব্যবহারের বিরোধীতা করছেন।
হিলারি বলছেন তারা অর্থাৎ ইসলামিক স্টেট যোদ্ধারা চায় , মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান সৈন্যরা যেন ফিরে যায় । তারা চায় স্থলে আমেরিকান সৈন্য লড়াই করুক , তাতে তারা আরও লক্ষ্যস্থল খুঁজে পাবে আরও লোককে নিজেদের দলে ভেড়াতে পারবে।
হিলারি ক্লিন্টনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি ভার্মন্ট অঙ্গরাজ্যের সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স , সিরিয়ায় সরকার পরিবর্তন সম্পর্কে হিলালির সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন । বার্নি স্যান্ডার্স বলেন , আসাদ তো আর যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমণ করছেন না। আইসিস করছে। আইসিস ফ্রান্সকে আক্রমণ করছে এবং রাশিয়ার বিমানের উপর আক্রমণ করছে। আইসিসকে নির্মূল করাই হতে হবে আমাদের পররাষ্ট্র ও সামরিক নীতির অগ্রাধিকার
BIPARTISAN POLICY CENTER এর জন ফোর্টিয়ার বলছেন সন্ত্রাসবাদ নিয়ে উদ্বেগ নির্বাচনী অভিযানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলছেন সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নটা যখন ওঠে এবং যখন এটা মনে করা হয় যে আমেরিকায় তা আসতে পারে , যখন লোকজন দেখে যে আইসিস আমেরিকানদের শিরশ্ছেদ করছে , কিংবা প্যারিসে অথবা স্যান বার্নারডিনোতে হামলা চালাচ্ছে , তখন সেটা একটা বাস্তব ইস্যু হয়ে ওঠে এবং আমার মনে হয় রিপাবলিকানরা সেটাই তুলে ধরছেন।
সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে দেখা গেছে , ভোটদাতারা সন্ত্রাসবাদ এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে , অর্থনীতির মতো চিরাচরিত প্রসঙ্গের চাইতে গুরুত্ব দিয়েছেন অনেক বেশি।
:
‘