অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন উদ্ভাবকের আদলে বার্বি পুতুল


ব্রিটেনের অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের সহ-নির্মাতার সম্মানে তার ছবিতে তৈরি একটি বার্বি পুতুল ধরে ছবির জন্য পোজ দিয়েছেন।
ব্রিটেনের অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের সহ-নির্মাতার সম্মানে তার ছবিতে তৈরি একটি বার্বি পুতুল ধরে ছবির জন্য পোজ দিয়েছেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক ডেইম সারাহ গিলবার্টকে তার নিজের বার্বি পুতুল দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। মহামারী চলাকালীন তার সাফল্য উদযাপন করা হয় এইভাবে।

অধ্যাপক গিলবার্ট করোনাভাইরাসের অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন , যা এখন বিশ্বের অনেক দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানের ইতিহাস সম্পর্কিত যাদুঘরে অধ্যাপক বলেন, "আমি জানি যে আমার বন্ধুরা এবং পরিবার জানতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত হবে যে এখন আমার চেহারার আদলে একটি বার্বি পুতুল আছে।" তাঁর চেহারার বার্বি পুতুল তৈরির এই ধারণাটিকে "অদ্ভুত" বলেন অধ্যাপক গিলবার্ট।

অধ্যাপক গিলবার্ট বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত(স্টেম) এবং স্বাস্থ্য সেবাতে জড়িত আরও পাঁচজন নারীর সঙ্গে যোগ দিলেন যাদের চেহারার বার্বি পুতুল তৈরি করে অমর করে রাখা হয়েছে।

এরা হচ্ছেন জরুরী শাখার নার্স এমি ও'সালিভান, যিনি ব্রুকলিনের ওয়াইকফ হাসপাতালে প্রথম কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন; ডাঃ অড্রি ক্রুজ, লাস ভেগাসের একজন সম্মুখসারির কর্মী যিনি জাতিগত পক্ষপাত এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অন্যান্য এশিয়ান-আমেরিকান চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। ডাঃ চিকা স্টেসি ওরুইয়া, টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ চিকিৎসক যিনি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন; বায়োমেডিক্যাল গবেষক ডাঃ জ্যাকলিন গোয়েস ডি জিসাস, যিনি ব্রাজিলে কোভিড-১৯ এর প্রকরণের জিনোমের সিকোয়েন্সিংয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কৃতিত্ব অর্জন করেছেন; এবং ডাঃ কিরবি হোয়াইট, যিনি গাউনস ফর ডক্টরস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা, একটি গাউন যা ধুয়ে পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে, যা অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ায় সম্মুখসারির কর্মীদের মহামারী চলাকালীন রোগীদের দেখা চালিয়ে যেতে সক্ষম করে।

অধ্যাপক গিলবার্ট আশা করেন যে পুতুলগুলি বুধবার (আগস্ট ২০২১) উন্মোচন করা হয়েছে, মেয়েদের পরবর্তী প্রজন্মকে স্টেমকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে অনুপ্রাণিত করবে। অধ্যাপক গিলবার্টের মতে,বিশ্বব্যাপী স্টেমে নারীদের অবদানকে কম তুলে ধরা হয়।

অধ্যাপক গিলবার্ট বলেন, "আমি আশা করি আমার বার্বি পুতুল এবং অন্যান্য নারীরা যারা বিজ্ঞান ও চিকিত্সা বিজ্ঞানে কাজ করে তাদের চেহারার বার্বিগুলো অন্যান্যদের মনে করিয়ে দেবে যে তাদের জন্য আরও এমন অনেক পেশা আছে। অর্থাৎতারা যখন খেলছে এই পুতুলগুলো দিয়ে তখন তারা চিন্তা করছে ভবিষ্যতে কোন পেশাকে বেছে নেবে।"

অধ্যাপক গিলবার্ট ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিপাহ, মার্স, লাসা, ক্রিমিয়ান-কঙ্গো হেমোরেজিক ফিভার সহ অনেক রোগজীবাণুর ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করেন।২০২০ সালে তিনি সার্স-কোভ-২ ভ্যাকসিন প্রকল্প শুরু করেন।অক্সফোর্ডের সহকর্মীদের সঙ্গে তিনি করোনা ভ্যাকসিনের উদ্ভাবন থেকে শুরু করে এর ক্লিনিকাল ডেভেলপমেন্ট ও দ্রুত উৎপাদন করে তা প্রথমে মানুষের শরীরে পরীক্ষা করতে পারছেন।

অধ্যাপক গিলবার্ট বলেন, "স্টেমে আমার পেশা আমাকে বিভিন্ন মানুষের সাথে কাজ করতে এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে সুযোগ করে দিয়েছে। এমন কিছু তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি যা শত শত এবং সম্ভাব্য হাজার হাজার জীবন বাঁচাতে পারে। ভবিষ্যতেও আরো অনেক মানুষকে বাঁচানো সম্ভব হবে। আমরা এই অবস্থানে আসতে পারতাম না যদি না আমাদের বিজ্ঞানীরা এই সমস্যাগুলি নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতো।

কুইন’স বার্থডে অনার্স অর্থাৎ রানীর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ ক্ষেত্রে অবদানকারীদের উপাধিতে ভূষিত করা হয়ে থাকে, ২০২১ সালের জুন মাসে, প্রফেসর গিলবার্ট বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্যের সেবার জন্য ডেইমহুড উপাধি অর্জন করেন।

XS
SM
MD
LG