৫০ বছর আগে আইনপ্রণেতারা ১৯৬৫ সালের ভোটাধিকার আইন পাশ করেন এবং আমেরিকার তদানিন্তন প্রেসিডেন্ট Lyndon Johnson তা সাক্ষর করেন। ওই আইনের অধীনে দেশের সর্বত্র ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্ন বৈষম্যবাদ অবৈধ করা হয়।
ভয়েস অফ আমেরিকার সংবাদদাতা Chris Simkins তার রিপোর্টে জানিয়েছেন ওই আইন পাশ হওয়ার আগে বহু বছর ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়।
রিপোর্টটি পড়ে শোনাচ্ছেন শাগুফতা নাসরিন কুইন ও সেলিম হোসেন।
১৯৬৫ সালে President Lyndon Johnson যখন ভোটাধিকার আইন সাক্ষর করেন , তিনি ইতিহাস রচনা করেন। ওই আইন যুক্তরাষ্ট্রে সব চাইতে কার্যকর নাগরিক অধিকার সংশ্লিষ্ট আইন বলে মনে বিবেচনা করা হয়।
প্রেসিডেন্ট জনসন বলেন, " এ দেশে গণতন্ত্রের প্রক্রিয়ায় যতক্ষন না প্রতিটি আমেরিকান -- সব জাতির -- সব বর্নের সম অধিকার পাবে আমরা ফিরে দাড়াবো না।”
ভোটাধিকার আইন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে সর্বত্র সব স্থানে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য ও স্থানীয় পর্যায়ে কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে যে বর্ন বৈষম্য ছিল তা দূর করে। ওই আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী কার্যকর করে। আফ্রিকান আমেরিকানরা ভোট দেওয়ার অধিকার পান।
কংগ্রেসম্যান জন লুইস বলেন, " ১৯৬৫ সালের ভোটাধিকার আইন বিপুল সংখ্যক মানুষকে মুক্ত করেছে ও স্বাধীন করেছে।”
John Lewis, যিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে একজন Congressman, তিনি ১৯৬৫ সালে Alabama রাজ্যের Selmaয় ভোটাধিকারের জন্য সব মিছিলে অংশ নেন। সে সময় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের হামলার দৃশ্য দেখে সারা দেশে লোকজন তার প্রচন্ড নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। তার ফলে দ্রুত ভোটাধিকার আইন পাশ হয়ে যায়।
"এর জন্য যত মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তার একটা মূল্য আছে। আমাদের অনেকে যে রক্ত দিয়েছে তারও মূল্য আছে।”
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে professor Andra Gillespie বলেন সরকারের সহায়তায় ব্যাপক ভাবে প্রচেষ্টা চালানো হয়, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের রেজিস্টার করার জন্য। তিনি বলেন," ১৯৬০ এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিকে আফ্রিকান আমেরিকানদের মধ্যে ভোট দেওয়ার হার প্রচন্ড ভাবে বেড়ে যায়। আর দক্ষিণাঞ্চলে বহু স্থানে এবং রাজ্যে, শত শত, হাজার হাজার কৃষ্ণাঙ্গ ভোট দিতে পেরেছেন।”
কৃষ্ণাঙ্গ নেতারা বলেন ভোটাধিকার অর্জনের জন্য যে আত্মত্যাগ করতে হয়েছে তা আমাদের মনে রাখতে হবে এবং তা উদযাপন করতে হবে। জর্জিয়া রাজ্যের Republican Partyর সংখ্যালঘু দের সংশ্লিষ্ট করার কার্যক্রমের পরিচালক হচ্ছেন Leo Smith। তিনি বলেন, " আমাদের এমন একটা সমাজ ছিল যেখানে আমাকে হয়ত মারধোর করা হতো বা আমার উপর আক্রমণ চালানো হতো ঠিক যেমন John Lewisকে করা হয়েছিলো। তিনি আমার জন্যই --- আহত হয়েছিলেন। সেই রক্ত যেন বৃথা না যায়। তাঁর সেই দুর্দশার কোন মূল্য নেই সেটা কখনও ভাববেন না। আমি গর্বিত যে সেই সমাজে পরিবর্তন ঘটেছে।”
৫০ বছর পর Atlantaর সাবেক Mayor Shirley Franklin স্মরণ করেন ১৯৬৫ সালের ভোটাধিকারের কথা --- কিভাবে তা নিশ্চিত করেছে যেন তিনি নির্বচনে দাড়াতে পারেন ও নির্বচিত পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেন।
" সৌভাগ্যবশত আমার ভেতর অনেকে এমন কিছু দেখেছেনযা আমি নিজেও দেখিনি। তারা আমায় উৎসাহ দিয়েছেন আমি যেন আমার পরিচিত গন্ডির বাইরে বেরোই এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। সেই তখন থেকেই আমার মিশন ছিল অন্যান্যদের সেই একই ভাবে উৎসাহ দেওয়া।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন ভোটাধিকার আইন দেশের জন্য একটা বিজয় ছিল। কারণ ওই আইন, গণতন্ত্রের সব চাইতে শক্তিশালী হাতিয়ার ভোট দেওয়াকে ন্যায্য ও নিরপক্ষ করেছে।