আজ সকালে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরী বিশ্বেব্যাপী শান্তি, ন্যায্যতা, মানাধিকার, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য এবছর ১৪জন মহিলাকে ‘আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকতা’ পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানান, তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত শোনাচ্ছেন – রোকেয়া হায়দার।
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতর ২০০৭ সাল থেকে এই International Women of Courage এ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করেছে। এ পর্য্যন্ত ৬০টি দেশের প্রায় ১শো মহিলা এই বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন। মানবাধিকার ও নারীর সম-অধিকার রক্ষা, শান্তি, নারীর ক্ষমতায়ণ, লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনের মত ক্ষেত্রে যে সব মহিলা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দৃষ্টান্তসূচক অবদান রেখে চলেছেন, তাদের কাজের স্বীকৃতি জানিয়ে প্রতি বছর এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর বাংলাদেশ, চীন, ইরাক, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, গুয়াতেমালা, রাশিয়া, স্লোভাকিয়া, বেলিজ, ইয়েমেন, তানজানিয়া, মরিতানিয়া, সুদানসহ ১৪টি দেশের বিশিষ্ট মহিলাদের হাতে এই এ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়ার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরী কিছু বক্তব্য রাখেন।
মিঃ কেরী বলেন, ‘দুই কন্যার গর্বিত পিতা এবং এক বলিষ্ঠ মহিলা – যিনি আন্তরিকতার সঙ্গে এ ক্ষেত্রে তার অবদান রেখেছেন, তার স্বামী হিসেবে – বিশ্বাস করুন, আমি জানি মহিলা ও বালিকাদের ক্ষমতায়ণ, নিজেদের ইচ্ছামত সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা যে কতখানি পরিবর্তন আনতে পারে আমি তা উপলব্ধি করতে পারি’।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মহিলাদের বিরুদ্দে সহিংসতা অথবা সমাজে মহিলা ও বালিকাদের পৃথক করে রাখা কখনোই মেনে নেবো না। আমরা বাল্য বিবাহ এবং জোরপূর্বক বিবাহ সহ্য করবো না, অথবা আসিরিয়া বা ইরাকে সন্ত্রাসীরা যে ভাবে শিশু কন্যাকে যে কোন মূল্যের বিনিময়ে গবাদিপশুর মত বিক্রী করছে তা বরদাশত্ করবো না। আমরা এমন কোন বিশ্বকে মেনে নেবো না যেখানে কিশোরী-বালিকাদের শিক্ষা, বা স্বাস্থ্য পরিচর্যা থেকে বঞ্চিত করা হয় অথবা তাদের যৌনাঙ্গ হানি করা হয়। এবং যারা একথা বলে থাকে যে এই ধরণের নির্যাতনমুলক বিশেষ কোন ব্যবস্থা হচ্ছে চিরাচরিত এক নিয়ম এবং তার কোন বিকল্প নেই, তবে এটা করতে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই, আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলবো যে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে ত্রুটিপূর্ণ এবং তা বন্ধ করা আমাদের সবার দায়িত্ব’।
ব্যারিস্টার সারা হোসেন বাংলাদেশে মানবাধিকার নারীর ক্ষমতায়ণ ও সামাজিক ন্যায্যতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন এই পুরস্কার পেলেন। এবারের পুরস্কার বিজয়ীরা আগামী কয়েকদিনে রাজধানী ওয়াশিংটন ছাড়াও অন্য কয়েকটি রাজ্যে যাবেন বিশেষ কিছু কর্মসূচী পরিদর্শন করবেন।