অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কারাগারে লেখক মুশতাকের মৃত্যু, নানা প্রশ্ন


লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। তার মৃত্যু স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক! ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার রাতে কাশিমপুর কারাগারে মারা যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার বিরোধী পোস্ট দেয়ার অপরাধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত মে মাসে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছয়বার তার জামিন আবেদন নাকচ করা হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে নির্যাতনের কোনো আলামত পাননি কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট মো. অসিউজ্জামান। মুশতাকের পরিবার সরাসরি কিছু বলতে চাননি। অবশ্য তার স্ত্রী লিপা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেছেন, মুশতাক বলল, ও ভালো আছে। কোনো সমস্যা নেই। ওর একটা ছোট ভুঁড়িও হয়েছে, যেটা কখনো ছিল না। আমি তো কাল বিকেল পর্যন্ত জানি ও সুস্থ আছে। এটা কী হলো?

please wait

No media source currently available

0:00 0:02:30 0:00
সরাসরি লিংক

মুশতাকের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, ২৩শে ফেব্রুয়ারি তার সাথে দেখা হয়েছিল। তখন তার মনে হয়নি দু’দিন পরেই তিনি মারা যাবেন। জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, মুশতাক আহমেদ আইনি বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। কারাবন্দি কার্টুনিস্ট কিশোর সম্পর্কে বলেন, তাকে মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে। পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, একটা অস্বাভাবিক মৃত্যু বলুন বা স্বাভাবিক মৃত্যু বলুন। নানা প্রশ্ন আসে। সব মৃত্যুরই তদন্ত হয়। এটারও হবে।

কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস এক বিবৃতিতে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত, স্বচ্ছ এবং স্বাধীন তদন্ত দাবি করেছে। সিপিজে’র এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক আলিয়া ইফতিখার বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই মুশতাক আহমেদ কীভাবে মারা গেছেন তার তদন্তের অনুমতি দিতে হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ঘটনাটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, এই মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। মত প্রকাশের কারণে একজন লেখককে এভাবে দিনের পর দিন আটক রাখারও সমালোচনা করেন তিনি। তিনি বলেন, এই মৃত্যুর দায় রাষ্ট্র, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। ড. মিজান বলেন, একজন ব্যক্তি একটা কিছু লিখলেই তাকে এভাবে মাসের পর মাস কারাগারে রাখতে হবে এর পেছনে কী এমন কারণ রয়েছে। তার জামিন পাওয়ার অধিকার ছিলো। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেছেন, মুশতাককে কারাগারেই হত্যা করা হয়েছে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে এখনই কবর দেয়ার সময় এসেছে। এই আইন দিয়ে গলা বন্ধ করা যায় না।

লেখক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, এমন একটা মামলার মারপ্যাঁচে ফেলে মুশতাক আহমেদকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া অন্যায়। এই মুহূর্তে আমি এই মামলায় গ্রেপ্তার কার্টুনিস্ট কিশোরের মুক্তি চাই। আমাদের একটা সংবিধান আছে। রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হলো সেই সংবিধান। আমি মনে করি সরকারও সংবিধানে বিশ্বাস না করে পারে না। এই সংবিধানেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা স্বীকৃত।

এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে কতিপয় বাম ছাত্র সংগঠন শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে আগামী সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

XS
SM
MD
LG