অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের সর্বত্র কঠোর নিরাপত্তায় প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো দুর্গাপূজা


ঢাকায় দুর্গা পূজা উৎসবের শেষ দিনে বুড়িগঙ্গা নদীতে হিন্দু দেবী দুর্গার একটি মাটির মূর্তি বিসর্জন দেন ভক্তরা।১৫ অক্টোবর ২০২১। (ছবি-এএফপি/মনির-উজ-জামান)
ঢাকায় দুর্গা পূজা উৎসবের শেষ দিনে বুড়িগঙ্গা নদীতে হিন্দু দেবী দুর্গার একটি মাটির মূর্তি বিসর্জন দেন ভক্তরা।১৫ অক্টোবর ২০২১। (ছবি-এএফপি/মনির-উজ-জামান)

বাংলাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ও টানটান উত্তেজনায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। আজ বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে শুরু হয় বিসর্জন। একদিকে বিদায়ের বেদনা অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দে দেবীকে বিদায় জানানো হয়।

এ বছর রাজধানীতে ২৩৮টি ও সারাদেশে ৩২ হাজার ১১৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহামারীর কারণে গত বছরের মতো এ বছরও রামকৃষ্ণ মিশন মঠে আয়োজন হয়নি কুমারী পূজা। ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে সূচনা হয়েছিলো শারদীয় দুর্গোৎসবের। শেষ হয়েছে দেবী বিসর্জনে। ধর্মীয় রীতিনীতি ও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মানা হয় পূজামন্ডপে। নিরপত্তা ছিল অন্য যেকোন বছরের তুলনায় বেশি। বিসর্জনের দিনে মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট ডাটা বন্ধ ছিল ১৩ ঘন্টার বেশি সময়। তবে বিটিআরসি এব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। ছিল না তাদের পূর্ব ঘোষণাও।

এবার পূর্জায় আলাদাভাবে করোনা থেকে মুক্তি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিসহ সব ধরণের মঙ্গল কামনা করা হয়। রাজধানীতে দুপুরের পর থেকেই বিসর্জনের জন্য প্রতিমাগুলো নিয়ে যাওয়া হয় বুড়িগঙ্গা নদীতে। তারপর মঙ্গলধ্বনি, উলুধ্বনি, শাঁখ আর ঢাকের ধ্বনিতে দেবী প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় বুড়িগঙ্গায়। প্রতিমা ঘাটে নেয়ার পর ভক্তরা শেষবারের মতো ধূপধুনো নিয়ে আরতি করেন। পুরোহিতের মন্ত্রপাঠে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেন।

আবারও মঙ্গলবার্তা নিয়ে আগামী বছর যেন মা দুর্গা আগমন করেন বিসর্জনকালে সেই প্রার্থনা করেন ভক্তরা। রাজধানীতে বুড়িগঙ্গা নদী, তুরাগ নদ ছাড়াও বিভিন্ন জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। সারাদেশে একইভাবে দিয়ে বিসর্জন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি জানান, বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। চলে রাত পর্যন্ত। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সব ধর্মাবলম্বী মিলে-মিশে বাস করুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

বসুন্ধরা পূজা কমিটির সাধারন সম্পাদক পবিত্র সরকার বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে ভাঙচুরের প্রতিবাদে প্রতিমা বিসর্জন ছাড়া আর কোন আনুষ্ঠানিকতা করা হয়নি। সিঁদুরবরণসহ অন্য কোন কর্মসূচিও পালন করা হয়নি। তিনি বলেন, "আমরা সবার মঙ্গল কামনা করি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে বন্ধন দেশে রয়েছে সেটি অটুট থাকুক। বিভিন্ন স্থানে যেসব অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে, সেটি যেন আর না ঘটে। হিন্দু-মুসলিম সকলে যেন দেশে মিলে-মিশে থাকতে পারি।"

XS
SM
MD
LG