তালেবান নতুন নেতার নাম ঘোষণা

Afghanistan.

আফগানিস্তানে তালেবানদের সূত্রে আজ শুক্রবার ঘোষনা করা হয়েছে-তালেবান দলের সর্বোচ্চ পর্ষদ ‘শুরা’ তালেবান দলের নেতা হিসেবে মুল্লা আখতার মনসূরকে বেছে নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইসলামাবাদ থেকে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন আমাদের সংবাদদাতা আয়ায গুল। রিপোর্টের বঙ্গানুবাদ শোনাচ্ছেন সরকার কবীরূদ্দীন।

তালেবান দল মুল্লা ওমারের মৃত্যু সংবাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল বৃহস্পতিবার এবং এরই একদিন পর শুক্রবার তারা নতুন নেতার নাম প্রকাশ করলো।শুক্রবারের এ ঘোষনা ভয়েস অফ এ্যামেরিকাকে ই-মেইল করে জানিয়েছেন তালেবান মূখপাত্র যাবিহউল্লা মুজাহিদ।মুল্লা আখতার মনসুর মুল্লা ওমারের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন এবং ঐ সময় তালেবান গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ও সামরিক বিষয়াবলির প্রধান কর্তাব্যক্তি ছিলেন তিনি।ঘোষনায় বলা হয়- মৌলভী হাইবাতুল্লা আখান্তযাদা এবং মৌলভী সিরাজুদ্দীন হাক্কানী মুল্লা মনসুরের সহকারী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন।

সিরাজুদ্দীন হাক্কানী বহূকাল যাবতই তথাকথিত হাক্কানী নেটওয়ার্কের প্রধান কর্তাব্যক্তি থেকেছেন।তালেবান দলের সঙ্গে গাঁটবন্ধনে যুক্ত এই জঙ্গি নেটওয়ার্কের অবস্থান আফগান সীমান্ত সংলগ্ন পাকিস্তানের উপযাতি অঞ্চলের উত্তরাঞ্চবর্তী ওয়াযিরিস্তানে।যুদ্ধের সময় জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে/ আফগান সরকারের ওপরে - বহুবার প্রাণঘাতি সব আক্রমন অভিযান চালিয়েছে এই জঙ্গি নেটওয়ার্ক,তেমনটিই বলা হয়ে থাকে।

আর মৌলভী হাইবাতুল্লা আখান্তযাদার সম্পর্কে যা বলা হয় তা হলো যে, ২ হাজার একের আগে আফগানিস্তানে যখন কিনা তালেবান দলের শাসন চলছিলো, সেই সময়, তিনি ছিলেন আদালত সমুহের বা বিচার বিভাগের প্রধান কর্তা ব্যক্তি।

তালেবানদের সরকারী সূত্র থেকে নতুন নেতা হিসেবে মুল্লা মনসূরের নাম ঘোষনা করা হ’লেও তালেবান সূত্র থেকেই বলা হচ্ছে- কোনো কোনো মহল থেকে-দল উপদলের পক্ষ হতে তাঁর এ মনোনয়নে ঘোর আপত্তি উঠেছে - এবং তাঁরা এর বিপরিতে সমর্থন দিচ্ছেন মুল্লা ওমরের জেষ্ঠ পুত্র মুল্লা ইয়াকুবকে।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সরকারের ঘোষনায় জানানো হয়-দীর্ঘদিনের রোগভোগের কারণে দলের নেতা মুল্লা ওমর মারা যাওয়ার খবর তালেবান সূত্রে নিশ্চিত করে বলবার পর,আফগান সরকারের সঙ্গে গোষ্ঠীর চলতি শান্তি আলোচনা মুলতুবি করা হয়েছে।

তালেবান গোষ্ঠী- কখন তিনি মারা যান-- সেকথাটা এখনো অব্দি বলেনি- তবে, আফগান সরকারের দাবী যে- দু’বছর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়, করাচীতে, হাসপাতালে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র যখন আফগানিস্তানে আক্রমন অভিযান চালায় সে সময়,মুল্লা ওমর তালেবান গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন।তালেবান তখন আল কায়েদাকে মদত জুগিয়েছিলো এবং আল কায়েদার ঐ সময়কার নেতা ওসামা বিন লাদীনকে আশ্রয় দিয়েছিলো- যে ওসামা বিন লাদীন যুক্তরাষ্ট্রে ছিনাতই করা উড়োজাহাজ দিয়ে প্রায় তিন হাজার মানুষের যে প্রাণ বিনাশ করা হয়েছিলো সে জঙ্গী হামলার পরিকল্পনা আঁটবার কৃতিত্ব দাবি করেছিলেন।

দু’ হাজার একের ঐ হামলা তৎপরতার পর পরই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তরফে আল কায়েদা ও তালেবান গোষ্ঠীর বহু নেতাকে পাকড়াও করতে বিপুল সব অঙ্কের পারিতোষিক ঘোষনা করা হয়েছিলো।মুল্লা ওমরের মাথার দাম ধার্য হয়েছিলো এক কোটি ডলার।সিরাজুদ্দিন হাক্কানীর ব্যাপারেও প্রায় ঐ এক কোটি ডলার পরিমানই পারিতোষিক ঘোষনা করা হয়েছিলো।

ওমার শীর্ষ সেনাধিনায়ক ও আধ্যাত্মিক নেতা থেকেছেন আফগানিস্তানে ১৯ শ’ ৯৬ পরবর্তী সময়ে। পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার পর থেকে, নিউ ইয়র্কে- ওয়াশিংটনে দু’ হাজার একের হামলার পরের অধ্যায়ে- যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যে আক্রমন অভিযান পরিচালিত হয় তার পরের সময়টাতে ওমার লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন।

Your browser doesn’t support HTML5

আফগানিস্তানে তালেবানদের সর্বোচ্চ পর্ষদ ‘শুরা’ তালেবান দলের নেতার নাম ঘোষনা।