পোল্যান্ডের দিকেই ছুটছেন ইউক্রেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

পোল্যান্ডের দিকেই ছুটছেন ইউক্রেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

পোল্যান্ড যেতে ভিসা লাগবে না। এই খবর জানাজানি হওয়ার পর ইউক্রেনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা দলে দলে ইউক্রেন ছাড়তে শুরু করেছেন। শুক্রবার ভোরের দিকে পোল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের তরফে জানানো হয়, ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ড যেতে হলে কোনো ভিসার দরকার হবে না। আগের সিদ্ধান্ত ছিল ১৫ দিনের ভিসা দেবে পোল্যান্ড।

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে কারফিউ চলছে। কারফিউ উপেক্ষা করে শতাধিক বাংলাদেশি ইউক্রেন ছেড়েছেন। কেউ গেছেন ট্রেনে। অনেকে আবার প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে পাঁচশ' কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিচ্ছেন। বিকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন এই প্রতিনিধিকে জানান, পোল্যান্ড সরকার বাংলাদেশিদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেয়ায় একটা ইতিবাচক ফল এসেছে। যারা দোটানার মধ্যে ছিলেন তারা ইউক্রেন ছাড়তে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই কয়েকজন পৌঁছে গেছেন। রাষ্ট্রদূত আরও জানান, যাদের পাসপোর্ট নেই তাদের জন্য দূতাবাস ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করছে। রোমানিয়া সরকার ভিসা ছাড়া দুইদিন অবস্থানের সুযোগ দিয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণ মইন আহমেদ পড়ালেখা করছিলেন কিয়েভের পলিটেকনিক্যাল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। পোল্যান্ড সরকারের সিদ্ধান্ত জানার পর তিন বন্ধু ঠিক করেন- যে করেই হোক কিয়েভ ছাড়তে হবে। একদিকে কারফিউ, অন্যদিকে রুশ বাহিনী হামলা করতে পারে যেকোনো সময়। প্রথমে চেষ্টা করলেন প্রাইভেট গাড়িতে করে যাওয়ার। কিন্তু তিনজনকে দিতে হবে কমপক্ষে ১২০০ ডলার। এই টাকা তাদের কাছে নেই। পরে সিদ্ধান্ত নেন ট্রেনে যাওয়ার। ট্রেনের টিকিটও নেই। বিনা টিকিটে উঠে পড়লেন ট্রেনে। তিনি বলছিলেন, বাংলাদেশিরা অনেকেই অর্থকষ্টে পড়েছেন। ব্যাংক বন্ধ। এটিএম বুথ থেকেও ক্যাশ ওঠানো যাচ্ছে না। আরও জানালেন, বৃহস্পতিবার রাতে কিছু খাবার পেয়েছিলেন। এরপর খাবার নেই কোথাও।

ন্যাশনাল মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএস শেষ বর্ষের ছাত্র রিজভী হাসান বললেন, ব্ল্যাক-সি'র তীরে অবস্থিত ওডেশা শহরটি সামরিক কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৃহস্পতিবার এই শহরে হামলা হয়েছে। আরও হামলার আশঙ্কায় বিদেশি নাগরিকরা নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন। রিজভীর সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন আরও ২০-২৫ জন বাংলাদেশি ট্রেনের টিকিটের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছিলেন। এরপর হঠাৎ করেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।