রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের প্রতি মিয়ানমারের আচরণকে “গণহত্যা” ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে ইদামান দ্বীপে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরা সৈকতে আগুন জ্বালিয়ে পাশে বসে আছে, ৪ জুন ২০২১। (ছবি- এপি)

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রতি দেশটির আচরণকে যুক্তরাষ্ট্র একটি “গণহত্যা” হিসেবে ঘোষণা করেছে।

ওয়াশিংটনের ইউএস হলোকস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সোমবার বলেন, “হলোকস্টের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ছয়বার এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছিয়েছে যে কোনখানে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আজকে সপ্তমবার এমনটি হল, যখন কিনা আমি স্থির করেছি যে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বার্মিজ সামরিক বাহিনী গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে।”

ব্লিংকেন জানান যে, একাধিক প্রতিবেদন এবং অন্যান্য নিরপেক্ষ সূত্র পর্যালোচনার পর তিনি এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

তবে দেশটির প্রতি নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্তের কি প্রভাব পড়বে সে বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার নয়।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণের জন্য, মিয়ানমারের সরকার ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ থেকে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে।

বাহ্যত একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দমনের নামে, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে এই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান আরম্ভ করার পর থেকে, মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নির্বিচার ধর্ষণ, হত্যা এবং রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ করা হয়েছে।

সাত লক্ষের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছে।

ওরেগন অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট দলীয় সেনেটর, জেফ মার্কলি এক বিবৃতিতে বলেন, “রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতাকে অবশেষে গণহত্যা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমি বাইডেন প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই”।

মার্কলি বলেন, “যদিও এই সিদ্ধান্তটি অনেকটাই বিলম্বিত, তা সত্ত্বেও এই নির্মম শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন করার বিষয়ে এটি একটি শক্তিশালী এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ”। তিনি আরও বলেন, “এমন প্রক্রিয়া সব সময়ই বস্তুনিষ্ঠভাবে, সংগতিপূর্ণভাবে করা উচিৎ, এবং এমনভাবে করা উচিৎ যাতে সেটি ভূরাজনৈতিক বিবেচনার ওপরে থাকে”।

যুক্তরাষ্ট্র ইতোপূর্বে, বসনিয়া ও হারজেগোভিনা, রোয়ান্ডা, ইরাক ও দারফুর, ইয়াজিদি ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর ইসলামিক স্টেট-এর হামলাকে গণহত্যা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়াও, উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রতি চীনের আচরণকেও গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।