ব্রিটেনের সরকার শুক্রবার উইকিলিকস এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান আসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যাপর্ণের আদেশ দেয়। সেখানে তিনি গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন হবেন। এমন ঘটনা এক মাইলফলক, তবে এক দশক ধরে চলতে থাকা এই আইনী গাথার এটাই সমাপ্তি নয়।
উইকিলিকস জানায় যে তারা এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করবে। আপিল দাখিলের জন্য তাদের হাতে ১৪ দিন সময় রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পাটেল, আসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যার্পণ অনুমোদনকারী এই আদেশে স্বাক্ষর করেন। উইকিলিকসে ব্যাপক পরিমাণ গোপন নথি প্রকাশের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে বিচারের সম্মুখীন হবেন আসাঞ্জ।
এপ্রিলে ব্রিটেনের এক আদালত রায় দেয় যে, আসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো যেতে পারে। এরপরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য তা পাটেলের কাছে পাঠানো হয়। আসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রে গোয়েন্দাগিরির জন্য ১৭টি অভিযোগে এবং কম্পিউটারের অপব্যবহারের জন্য একটি অভিযোগে অভিযুক্ত। আমেরিকার অভিশংসকরা বলছেন, আসাঞ্জ বেআইনীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিংকে গোপন কূটনৈতিক বার্তা ও সামরিক নথিপত্র চুরি করতে সাহায্য করেন, যা পরে উইকিলিকস প্রকাশ করে। এর ফলে কিছু মানুষের জীবন হুমকিতে পড়ে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলে, “ব্রিটেনের আদালত মনে করে না যে মি. আসাঞ্জকে প্রত্যার্পণ করা নিপিড়নমূলক, অন্যায় বা পদ্ধতির অপব্যবহার হবে” এবং তাই সরকারকে এই প্রত্যার্পণ আদেশ অনুমোদন করতে হয়েছে।
তাতে আরও বলা হয়, “তারা [আদালত] এও মনে করে না যে এই প্রত্যার্পণ তার মানবাধিকারের পরিপন্থী হবে, যার মধ্যে তার নিরপেক্ষ বিচারের অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে, এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালীন তার সাথে যথাযথ আচরণ করা হবে, যার মধ্যে তার স্বাস্থ্যগত বিষয়ও রয়েছে।”
৫০ বছর বয়সী আসাঞ্জের সমর্থক ও আইনজীবিরা পাল্টা যুক্তিতে বলছেন যে, তিনি একজন সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছিলেন এবং তিনি [সংবিধানের] প্রথম সংশোধনীর আওতায় বাকস্বাধীনতার সুরক্ষার দাবিদার। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন যে, তিনি এমন নথি প্রকাশ করেছেন যা ইরাক ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর অন্যায় আচরণ উন্মোচিত করেছে। তাদের যুক্তি হলো তার এই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণীত এবং যুক্তরাষ্ট্রে তিনি সুবিচার পেতে পারেন না।