ডি-৮ বৈঠক ২৭ জুলাই, অগ্রাধিকার পাবে জ্বালানি নিরাপত্তা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন

আগামী ২৭ জুলাই, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ডি-৮ এর মন্ত্রী পর্যায়ের ২০তম বৈঠক। বৈঠকে, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, বাণিজ্য, পর্যটন ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ কিছু বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

রবিবার (২৪ জুলাই) ঢাকায় গণমাধ্যমকে বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি জানান, “জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা একটি বৈশ্বিক সমস্যা; যা বৈঠকে আলোচনা করা হবে। কারণ এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তাকে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছি। খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যু ব্যাপকভাবে আলোচিত হবে। আমরা অন্য বন্ধুদের সঙ্গে আমাদের দক্ষতা শেয়ার করতে চাই। সহযোগিতার অনেক সুযোগ রয়েছে।”

জ্বালানি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, “এটি সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে এবং এটি বিশ্বব্যাপী একটি আলোচিত বিষয়। আমাদের অবশ্যই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিয়েও আলোচনা হবে।”

“কিছু ডি-৮ দেশ পর্যটন খাতে পরিপক্কতা দেখিয়েছে। তবে, সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের আরও বেশি কিছু করার সুযোগ রয়েছে। আর, আন্তঃবাণিজ্য বৃদ্ধি পেলেও ডি-৮ দেশগুলো এ বিষয়ে আরও কিছু করতে পারে। কীভাবে বাণিজ্যকে আরও প্রসারিত করা যায়, আমরা সে বিষয়ে আলোচনা করব;” জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ডি-৮ দেশগুলোর মধ্যে, প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ)-এর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আন্তঃবাণিজ্য বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।”

২০০৬ সালের ১৩ মে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে স্বাক্ষরিত ডি-৮ প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ), বাণিজ্যে ডি-৮ সহযোগিতার সবচেয়ে বাস্তব উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। চুক্তিটি, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক গভীর করার পারস্পরিক আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ এবং উচ্চ-স্তরে অর্থনৈতিক সংলাপের সূচনা করে। কয়েক দফা বহুপাক্ষিক আলোচনার পর ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট থেকে পিটিএ কার্যকর হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “২৭ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ডি-৮ বৈঠকে আজারবাইজানের সদস্যপদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বৈঠকে ডি-৮ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তাদের সহকর্মীরা প্রতিনিধিত্ব করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল প্লাটফরমে বৈঠকের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।”

বাংলাদেশ ২৫ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ডি-৮ কমিশনের ৪৫তম অধিবেশনের আয়োজন করবে। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশনের (ডি-৮) বা ডেভেলপিং-৮ হলো উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য গঠিত একটি সংস্থা। এর সদস্য দেশগুলো হলো; বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক। ১৯৯৭ সালের ১৫ জুন, সরকার প্রধানদের ইস্তাম্বুল ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ডি-৮ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করা হয়েছিল।

ডি-৮ এর উদ্দেশ্য হল; বিশ্ব অর্থনীতিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান উন্নত করা, বাণিজ্য সম্পর্কের বৈচিত্র্য আনা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করা ও নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা।