পাকিস্তানে আহমাদি সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘু সদস্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

মানচিত্রে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ

পাকিস্তানের সংখ্যালঘু আহমাদি সম্প্রদায়ের একজন সদস্যকে শুক্রবার মধ্য পাঞ্জাব প্রদেশে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। তিনি একটি চরম ডানপন্থী ইসলামিক দলের প্রশংসায় স্লোগান দিতে অস্বীকার করেছিলেন।

পুলিশ নিহত ব্যক্তিকে ৬২ বছর বয়সী নাসির আহমেদ বলে শনাক্ত করেছে এবং বলেছে যে তারা অবিলম্বে হামলাকারীকে আটক করেছে। দেশটির দীর্ঘ নিপীড়িত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আবাসস্থল রাবওয়াতে এই প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে।

সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রধান মুখপাত্র বলেছেন যে সে ব্যক্তি আহমদীদের প্রথা অনুযায়ী তার শ্রদ্ধা জানাতে একটি কবরস্থানে যাওয়ার জন্য শহরের প্রধান বাস স্টপে অপেক্ষা করছিলেন।

সেলিম উদ্দীন বলেন, একজন "ধর্মীয় কট্টরপন্থী" কাছে এসে আহমদকে কট্টরপন্থী ইসলামিক দলের স্লোগান দিতে বলে। সে বারবার আহমদকে "একটি ছুরি দিয়ে আঘাত করেছিলেন এবং স্লোগান না দেওয়ার জন্য তাকে হত্যা করে"।

মুখপাত্রটি বলেন নিহত ব্যক্তি ঐ সম্প্রদায়ের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন, হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা এই প্রাণঘাতী ছুরিকাঘাতের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

আহমদীরা নিজেদেরকে মুসলিম বলে মনে করে, কিন্তু পাকিস্তানের সংসদ ১৯৭৪ সালে তাদের অমুসলিম বলে ঘোষণা করে এবং ১৯৮৪ সালে সম্প্রদায়ের সদস্যদের "পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে মুসলমান হিসাবে জাহির করা" থেকে নিষিদ্ধ করার জন্য তাদের আইন আরও সংশোধন করে। পাকিস্তানে এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে প্রকাশ্যে তাদের বিশ্বাস ঘোষণা বা প্রচার করতে এবং উপাসনালয় নির্মাণে বাধা দেওয়া হয়েছে।

সমালোচকরা বলছেন, এই বিধিনিষেধগুলি সম্প্রদায়ের সামাজিক এবং আইনী নিপীড়নকে উস্কে দিয়েছে, যার ফলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রায় ২২ কোটি লোকের দেশ পাকিস্তান জুড়ে অসংখ্য আহমদীকে হত্যা করা হয়েছে।

সংখ্যালঘু গোষ্ঠীটি কট্টরপন্থী ইসলামিক নেতাদের দোষারোপ করে যে তারা প্রায়শই প্রকাশ্যে আহমদীদের নিন্দা করে এবং প্রতিশ্রুতি দেয় যে তাদের হত্যা করলে বেহেস্তে স্থান পাওয়া যাবে।

স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠীগুলি আহমদীদের নিপীড়নের বিষয়ে নিয়মিত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তাদের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কাজ না করার জন্য ধারাবাহিকভাবে পাকিস্তান সরকারের সমালোচনা করেছে।

খ্রীষ্টান, আহমাদি ও শিয়া মুসলিম এবং হিন্দুদের সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য পাকিস্তান প্রায়ই তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়।